কারমেন আর লুপিতার একটি করে হৃদপিণ্ড, দু’টি করে হাত, একটি করে ফুসফুস থাকলেও তাদের পাঁজরের খাঁচা থেকে শরীরের বাকি অংশ কমন।মার্কিন দেশের কানেক্টিকাটের দুই কিশোরী কারমেন আর লুপিতার জীবনের কাছে চাহিদা এমন কিছু অসাধারণ নয়। তারাও আর পাঁচটা সমবয়সি কিশোরীর মতোই হোমটাস্ক করতে চায়, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে চায় আর একটা থুড়ি দুটো ড্রাইভং লাইসেন্স পেতে চায়। এমনিতে তাদের ভাবনা-চিন্তা বা কাজকর্ম মোটেই তেমন ব্যতিক্রমী নয়। ব্যতিক্রম তাদের শরীরে। কারমেন আর লুপিতা কনজয়েনড টুইনস বা সংযুক্ত যমজ।কারমেন আর লুপিতার একটি করে হৃদপিণ্ড, দু’টি করে হাত, একটি করে ফুসফুস থাকলেও তাদের পাঁজরের খাঁচা থেকে শরীরের বাকি অংশ কমন। তাদের পাচনতন্ত্র, এমনকী জননাঙ্গও কমন। চার বছর বয়সে তারা হাঁটতে শেখে। তার পর থেকে ১২ বছর তারা কদম কদম এগিয়েছে। বুঝতে শিখেছে জীবনের মানে। জন্মের পরেই ডাক্তাররা তাদের আলাদা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এতে বিপদের সম্ভাবনা ছিল বলে করা হয়ে ওঠেনি।
১৬ বছর পরে আবার চিকিযসকরা নড়েচড়ে বসেছেন কারমেন আর লুপিতার কেস নিয়ে। তাঁদের বক্তব্য এই সময়ে তাদের আলাদা না করলে বিপদ দেখা দিতে পারে দু’জনেরই। কিন্তু আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া এক সাত্রাৎকারে কারমেন আর লুপিতা দু’জনেই জানিয়েছে, তাদের এই অস্ত্রোপচারে মত নেই। কারণ, তারা এই ১৬ বছর ধরে যে জীবন যাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে, তাতে তারা পরস্পরের থেকে আলাদা হলে মানসিক ভাবেই ভেঙে পড়বে।অস্ত্রোপচারে ভয় ছাড়াও আর একটা ভয় কারমেন আর লুপিতার পরিবারকে তাড়া করছে। এই পরিবারটি মেক্সিকো থেকে আগত। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মেক্সিকান শরণার্থী-সংক্রান্ত বিরোধিতা তাদের তাড়া করে বেড়চ্ছে। যে কোনও দিন আমেরিকা ছেড়ে চলে যাওয়ার আদেশ আসতে পারে, এই ভেবে চিন্তিত কারমেন আর লুপিতা আন্দ্রাদের পরিবার। আমেরিকা ছাড়লে সেখানকার চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হবে কারমেন ও লুপিতা। সেই বিপদের দিনে কী হবে ভেবে শঙ্কিত তাদের পরিজন।