পেরুর রাজধানী লিমা। মরুভূমির মধ্যে স্থাপিত দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজধানী শহর এটি। এ অঞ্চলে বাৎসরিক বৃষ্টিপাত মাত্র দশমিক ৫১ ইঞ্চি। অথচ বাতাসের আর্দ্রতা ৯৮ শতাংশ। মানুষের খাবার পানির একমাত্র উৎস কূপ। কিন্তু এই কূপের পানি নানা কারণেই দূষিত হয়। ফলে পানিবাহিত রোগের প্রাদূর্ভাবও এখানে বেশি।তবে এলাকাবাসীকে এ দুরবস্থা থেকে মুক্তি দিতে এক মহতী উদ্যোগ নিয়েছে প্রকৌশলীদের একটি সংগঠন, নাম ইউটিইসি (UTEC)। লিমার বুজাসা জেলায় তারা পানির এক অদ্ভুত শোধনাগার স্থাপন করেছে। এখানে পানির উৎস কোনো নদী, খাল বা নর্দমা নয়, এখানকার প্রচুর আর্দ্র বাতাস! শোধনাগার থেকে প্রায় একশ পরিবারকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করছে তারা।
ইউটিইসি শহরে এই শোধনাগারটি অনেকটা বিজ্ঞাপনের বিলবোর্ডের মতো। এটি দেখেই প্রতিদিন বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য সেখানে ছুটে যায় শত শত মানুষ।ইউটিইসির পানি শোধনাগারের যান্ত্রিক কৌশলটি হলো- প্রথমে এয়ার ফিল্টারের মধ্য দিয়ে পরিবেশ থেকে আর্দ্র বাতাস শোষণ করা হয়। তারপর এটি কনডেনসারে গিয়ে ঠাণ্ডা হলে বাতাসের জলীয় বাষ্প তরল পানিতে রূপান্তরিত হয়। সেই পানিকে কার্বন ফিল্টারের মধ্য দিয়ে সঞ্চালন করা হয়।পাঁচটি জেনারেটর দিয়ে এভাবে বাতাস থেকে পানি সংগ্রহের কাজ করা হয়। এই পানি আবার রিভার্স অসমোসিস প্রক্রিয়ায় পরিশুদ্ধ ও জীবাণুমুক্ত করা হয়। যেসব ট্যাংকিতে পানি জমা হয় সেগুলোর প্রত্যেকটির ধারণক্ষমতা ২১ লিটার। এমন পাঁচটি ট্যাংকি রয়েছে। পাঁচটি জেনারেটর দিয়ে পরিশুদ্ধ পানি সংশ্লিষ্ট ট্যাংকিতে গিয়ে জমা হয়। পরে সব পানি একটি ট্যাংকিতে জমা করা হয়।
যেভাবে বাতাস থেকে পানি সংগ্রহ করা হয় : ইউটিইসি জানায়, প্রতি তিন মাসে তারা ৯ হাজার ৪৫০ লিটার বিশুদ্ধ পানি উৎপাদন করে। এই পানি মাসে অন্তত একশ পরিবারের চাহিদা মেটায়।বিশুদ্ধ পানি উৎপাদনের এই প্রযুক্তি সব শহরে ও গ্রামে ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ইউটিসির।
No comments:
Post a Comment