আজব পৃথিবী

Monday, May 29, 2017

যেসব দেশে সেনাবাহিনী নেই

বিশ্বের বহু দেশ সামরিক শক্তি প্রদর্শন করতে ভালোবাসে, নিজেদের সামরিক বহর নিয়ে হাজির হয় রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে। অপরদিকে এমন সব দেশ আছে, যাদের সামরিক বাহিনী বলে কিছু নেই। 
এমন কিছু দেশের নাম দেয়া হলো যাদের কোনো সেনাবহিনী নেই। তারপরও তারা আছে বেশ সুখে-শান্তিতে –
কস্টারিকা
মধ্য অ্যামেরিকার এই দেশটির সংবিধানই বলে যে, দেশের কোনো সামরিক বাহিনী থাকবে না। এই পরিস্থিতি চলছে ১৯৪৯ সাল যাবৎ। জাতিসংঘের শান্তি বিশ্ববিদ্যালয় এই কস্টারিকায়। 
অ্যান্ডোরা
ইউরোপের এই ছোট্ট দেশটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১২৭৮ খ্রিষ্টাব্দে। আ্যান্ডোরার নিজস্ব সামরিক বাহিনী নেই, কিন্তু প্রয়োজনে স্পেন ও ফ্রান্স দেশটিকে সুরক্ষিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অ্যান্ডোরার আয়তন মাত্র ৪৭৮ বর্গমিটার, যা কিনা জাকার্তার মতো কোনো বড় শহরের চেয়ে কম। 
লিখস্টেনস্টাইন
ইউরোপের কেন্দ্রে এই ছোট্ট দেশটি তাদের সামরিক বাহিনী বাতিল করে দিয়েছে সুদূর ১৮৬৮ সালে, আর্থিক কারণে। যুদ্ধের সময় সেনাবাহিনী গঠন করা চলে, তবে কোনোদিন তার প্রয়োজন পড়েনি। দেশটি ছোট হলেও সমৃদ্ধ: মাথাপিছু আয় বিশ্বে শুধুমাত্র কাতার-এর চেয়ে কম। 
ভ্যাটিকান
ইটালির রাজধানী রোম-এর একাংশ।  ভ্যাটিকান হলো বিশ্বের ক্ষুদ্রতম দেশ, আয়তনে শূন্য দশমিক চার বর্গ কিলোমিটার৷ জনসংখ্যা ৮৪০। কাজেই জনসংখ্যার হিসেবেও ভ্যাটিকান বিশ্বের ক্ষুদ্রতম দেশ। 
সামোয়া
প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত দ্বীপরাজ্যটি নিউজিল্যান্ড থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করে ১৯৬২ সালে। সে যাবৎ দেশটির কোনো সামরিক বাহিনী নেই। নিউজিল্যান্ড প্রয়োজনে দেশটির প্রতিরক্ষার জন্য সামরিকভাবে হস্তক্ষেপ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 
তুভালু
প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত এই দ্বীপরাজ্যটির আয়তন মাত্র ২৬ বর্গ কিলোমিটার; জনসংখ্যা মাত্র দশ হাজার। তুভালু কমনওয়েল্থের সদস্য। এখানকার শাসনব্যবস্থা এক ধরণের সংসদীয় রাজতন্ত্র। 
নাউরু
প্রশান্ত মহাসাগরের এই দ্বীপরাজ্যটির আয়তন ২১ বর্গ কিলোমিটারের কিছু বেশি; জনসংখ্যা ১০,০০০। নাউরু মাইক্রোনেশিয়ার অংশ।
গ্রেনাডা
অতলান্তিক মহাসাগরের ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে অবস্থিত দেশটি আসলে মাত্র একটিমাত্র দ্বীপ, যার আয়তন ৩৪৪ বর্গ কিলোমিটার, জনসংখ্যা এক লক্ষ ৫০০০। দেশটি কমনওয়েল্থের সদস্য। শাসনব্যবস্থা: সাংবিধানিক রাজতন্ত্র। 

চার বোনের পেশা

মেক্সিকোর টাবাসকো রাজ্যের চার বোনকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যের দৈনিক ডেইলি মেইল। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মেক্সিকোর উন্নত অঞ্চলগুলোর অন্যতম টাবাসকোতে গর্ভ ভাড়া বা ‘সারোগেসি’ বাণিজ্যের বাজার এখন প্রায় ৯০ মিলিয়ন পাউন্ডের। সেখানে হারনান্দেজ বোনদের মতো অনেকেই গর্ভ ভাড়া দিয়ে রুটিরুজি জোগান। গর্ভ ভাড়া দিয়ে নিঃসন্তান দম্পতির মুখে হাসি ফোটানোই এই চার বোনের কাজ। শুধু গর্ভ ভাড়া দিয়েই প্রতি বছর ১০ হাজার পাউন্ড (১১ লাখ ৪০ হাজার টাকা) আয় করেন মেক্সিকোর এই চার বোন।ডেইলি মেইলকে এই চার বোন জানান, গর্ভ ভাড়া দিয়ে তাঁরা নয় মাসে যা রোজগার করেন, সেই পরিমাণ অর্থ আয় করতে তাঁদের ভাইদের ২০ বছর সময় লাগবে। 
হার্নান্দেজ বোনদের সবচাইতে বড় জন মিলাগ্রোস (৩০) জানান, তাঁর হাত ধরে বাকি তিন বোনের এই ব্যবসায় আসা। এখন মার্থা (২৯), মারিয়া (২৭) এবং পাউলিনা (২২) এই ব্যবসায় বেশ আয় করছে।মিলাগ্রোস বলেন, ‘প্রতিটি নারীর কাছে তাঁর সন্তান অমূল্য ধন। কিন্তু আধুনিক যুগে সন্তান ধারণে অক্ষম নারীদের মা হওয়ার ধরন পাল্টেছে। দিন যত এগোচ্ছে, প্রযুক্তি ততই মানুষের অপূর্ণতাকে পূর্ণতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তাই জমি ভাড়া নিয়ে ফসল উৎপাদনের মতো মায়ের গর্ভ ভাড়া নিয়ে সন্তান উৎপাদন আজ আর অবাক হওয়ার কোনো বিষয় নয়।
তিনি জানান, নিঃসন্তান দম্পতিদের সন্তানের জন্য একটি ব্যবস্থা গর্ভ ভাড়া বা সারোগেশন। সারোগেশনের অর্থ হলো গর্ভধারণে সক্ষম মায়ের ভ্রুণে শুক্রাণু প্রতিস্থাপন করে সন্তান লাভ। তবে ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্রে সারোগেশনের ব্যয় খুব বেশি। আর তাই ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্রের সন্তান ধারণে অক্ষম নারীরা সারোগেশনের জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর দিকে ঝুঁকছে বেশি।
হার্নান্দেজ বোনদের মেঝো জন সার্গস মার্থা বলেন, ২৩ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের এক নিঃসন্তান দম্পতির জন্য গর্ভধারণ করেছিলেন তিনি। ৩৬ বছর বয়েসের ওই নারী ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। ক্যান্সারের কারণে তাঁর গর্ভাশয়ের একটি অংশ অপসারণ করতে হয়। এতে চিরদিনের মতো সন্তান ধারণে অক্ষম হয়ে পড়েন তিনি। কিন্তু তাঁর যে একটা সন্তান চাই।
শেষে মেক্সিকোর এক এজেন্টের (চিকিৎসক) মাধ্যমে তাঁর (মার্থা) সঙ্গে যোগাযোগ করেন ওই নারী। শেষে তাঁর মাধ্যমেই সন্তানের মুখ দেখেছিলেন ওই নারী। দেশগুলোতে গর্ভ ভাড়া দেওয়া আইনত অবৈধ। তবে এই অঞ্চলের দরিদ্র নারীদের অভাবের সুযোগ নিয়ে তাদের দিয়ে এই কাজটি করিয়ে নিচ্ছেন চিকিৎসকরা। আর পরিবারে আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য আনতে নিজেদের গর্ভ ভাড়া দেন দরিদ্র নারীরা। আর এই দরিদ্র নারীদের দিয়েই ব্যবসা করে যাচ্ছেন এক শ্রেণির ব্যবসায়ী ও বেসরকারি হাসপাতাল। কিন্তু এই যে এত টাকার বাণিজ্য হচ্ছে, তার খুব সামান্যই পাচ্ছেন গর্ভ ভাড়া দেওয়া নারীরা। 
শুধু তাই নয়, এসব নারীরা দরিদ্র ও অল্পশিক্ষিত হওয়ায় অনেক সময় তাঁদের না জানিয়েই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা।যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণায় জানা যায়, কিছুসংখ্যক চিকিৎসক নিশ্চিত সাফল্যের আশায় অনেক নারীকে না জানিয়েই গর্ভে পাঁচ থেকে ছয়টি ভ্রূণ প্রবেশ করিয়ে থাকেন। অথচ চিকিৎসাশাস্ত্র বলছে, এটি ঠিক নয়। এ ক্ষেত্রে গর্ভ ভাড়া দেওয়া নারীর জীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে।

Sunday, May 28, 2017

বিয়ের আগে মা হওয়াটা বাধ্যতামূলক যেখানে

অদ্ভুত নিয়ম চালু রয়েছে পশ্চিম বঙ্গের মাদারিহাটে। যেখানে মেয়েদের বিয়ের আগে মা… হওয়াটা বাধ্যতামূলক। অর্থাৎ আগে মেয়েদের সাথে ১ বছর গোপন মিলন করা বাধ্যতামূলক! বিয়ের সমাজে নারী পুরুষের যৌন সম্পর্কের বৈধতা দিয়ে থাকে বিবাহ। এটা সামাজিক ও ধর্মীয় রীতি। তবে এর ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা যায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ারের বীরপাড়া-মাদারিহাট।সেখানে মাতৃত্বই দেয় পছন্দের সেই পুরুষকে বিয়ের অধিকার। এটাই রেওয়াজ ‘টোটো’দের। সেখানে সবমিলিয়ে ১ হাজার ৫৮৪ টোটোর বাস। এখনো নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছেন এই উপজাতিরা।টোটো সমাজের পুরুষদের কোনো মেয়েকে বেছে নেয়ার অধিকার রয়েছে। ছেলেটির পছন্দ হলে মেয়েটিকে তার সঙ্গে ১ বছর সহবাস করতে হবে। তার মধ্যে মেয়েটি গর্ভবতী হলে তবেই বিয়ে করার উপযুক্ত হয়ে উঠবেন।তবে বিয়ে করতে হলে আগে ২ পরিবারের অনুমতি নিতে হবে।

১১২টি দেশের জাতীয় সংগীত গাইতে পারেন

মালয়েশিয়ার ৩১ বছর বয়সী থিয়ান সি শিয়েন ১১২টি দেশের জাতীয় সংগীত মুখস্থ করেছেন। কেবল মালয় ও ইংরেজি ভাষা জানলেও এতগুলো ভাষার গান দিব্যি গাইতে পারেন।পেশায় আইনজীবী শিয়েন ২০০২ সালে শখের বশে জাতীয় সংগীত শিখতে শুরু করেন। তারপর একে একে এশিয়া, ইউরোপ এবং দক্ষিণ ও উত্তর আমেরিকার প্রায় সব দেশের জাতীয় সংগীত শিখে নেন। শিয়েন দাবি করেন, তিনি প্রায় হুবহু সুরে ১১২টি জাতীয় সংগীত গাইতে পারেন। দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় সংগীতও তিনি শিখেছেন, যা কিনা পাঁচটি ভিন্ন ভাষায় গাইতে হয়। ড্যানিশ ও আরবি সুর রপ্ত করতে তাঁর বেশ বেগ পেতে হয়েছে। তবে ফরাসি, স্প্যানিশ ও জার্মান কিছুটা সহজ মনে হয়েছে।শিয়েন এখনো নতুন নতুন জাতীয় সংগীত সংগ্রহ করছেন এবং শিখছেন। কারণ, পাঁচটি মহাদেশের প্রতিটি দেশের জাতীয় সংগীত শিখে নিতে চান তিনি। এই বিশেষ দক্ষতার জন্য বিশ্বজুড়ে অনেক বন্ধু পেয়েছেন। তিনি পড়াশোনা করেছেন যুক্তরাজ্যে, সেখানে আরও অনেক দেশের ছাত্রছাত্রীকে বন্ধু হিসেবে পান। গানের কোনো আনুষ্ঠানিক শিক্ষা নেই শিয়েনের। তবে সুর শুনে শুনে আয়ত্ত করার দক্ষতা তাঁর আছে। আর তাঁর আইকিউ বা বুদ্ধিমত্তার মাত্রা ১৭৬, যা কিনা ‘অসাধারণ প্রতিভাধর’ বা তার কাছাকাছি পর্যায়ের। হয়তো এ কারণেই তিনি এতগুলো ভাষার গান ও সুর মনে রাখতে পারেন। কুয়ালালামপুরের একটি তেল ও গ্যাস কোম্পানিতে আইনি পরামর্শকের চাকরি করেন শিয়েন। বললেন, জাতীয় সংগীত শিখতে গিয়ে তিনি ইতিহাসের অনেক বিষয় জানতে পারেন। যেমন: ভারত ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের রচয়িতা একই ব্যক্তি—কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।একমাত্র অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশই বাকি আছে, যার কোনো দেশের জাতীয় সংগীত এখনো শিয়েন শেখেননি। এ নিয়ে মজা করেন এভাবে, ‘পেঙ্গুইনরা যদি আমাকে একটা গান শিখিয়ে দিত, আমি সর্বাত্মক চেষ্টা নিয়ে শিখতাম।’