আজব পৃথিবী

Tuesday, September 5, 2017

কেমন হাত

ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য উত্তরপ্রদেশের বালক তারিক। বয়স ১২ বছর। জন্মের সময় থেকেই তার দুহাতে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। স্বাভাবিকের চেয়ে তা ১২ ইঞ্চি বেশি লম্বা। হাতের আঙ্গুলও অস্বাভাবিক লম্বা ও মোটা।তার এ হাত দেখলে অন্য বাচ্চারা ভয় পায় বলে তাকে স্কুলে ভর্তি করানো যায় নি। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে ভর্তি করাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তারিকের বন্ধুবান্ধব ছিল। কিন্তু তারা যখন দেখেছে, তার এ অসুখ ভালো হওয়ার নয়, তখন তারা তাকে ছেড়ে চলে গেছে।তাকে স্থানীয়রা ‘ডেভিল’ বা অশরীরি বা দুষ্টচক্রের মানুষ বলে আখ্যায়িত করে। তাকে মনে করা হয় অভিশপ্ত হিসেবে। কিন্তু তারিক জানে তার এ রোগ সারার মতো। তবে চিকিৎসা করানোর মতো সামর্থ নেই পরিবারের। তার পিতা মারা গেছেন। এরপর থেকে তারিককে নির্ভর করতে হয় তার ভাইয়ের ওপর।

সে নিজে কাপড় পরতে পারে না। খেতে পারে না। গোসল করতে পারে না। সবই করে দেয় তার ভাই। তার এ রোগ কি ধরনের তা পরীক্ষাও করা হয় নি। তবে কিছু ডাক্তার আন্দাজ করছেন তারিক ‘এলিফ্যান্ট ফুট’ নামের একটি রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারে। তারিক বলে, ‘এ অবস্থা থেকে আমি মুক্তি পেতে চাই। অন্য ছেলেমেয়ের মতো আমিও হতে চাই। প্রতিদিন স্কুলে যেতে চাই। খেলতে চাই। আমি স্বপ্ন দেখি, একদিন আমার স্বাভাবিক হাত হবে। এক সময় আমার বন্ধু ছিল। এখন কেউ নেই। সবাই আমাকে দেখে ভয় পায়। মানুষ মনে করে কোনো অভিশাপের ফল আমার এই অবস্থা।’তারিকের ভাই হরজ্ঞানের ভাষায়, ‘ওকে কোনো স্কুলই ভর্তি করাতে রাজি হয় নি। তারা বলেছে, ওর এত বড় হাত দেখে অন্য ছাত্রছাত্রীরা ভয় পাবে। আসলে তারিকের হাত অনেক বড়। আমার জীবনে আমি এত বড় হাত দেখিনি কখনো। এ হাত নিয়ে তারিকের জীবন স্থবির হয়ে আছে।’

বিশ্বের সব থেকে বড় লাইব্রেরি

মোট এক লাখ ১০ হাজার বর্গমিটারের বিশাল জায়গা নিয়ে ইরানের রাজধানী তেহরানে নির্মিত হয়েছে তেহরান বুক গার্ডেন।এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় লাইব্রেরি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।তেহরানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আব্বাসাবাদ হিলস-এ নির্মিত এই লাইব্রেরিটিতে বইয়ের দৃষ্টি আকর্ষক প্রদর্শনীর সঙ্গে রয়েছে একটি আর্ট গ্যালারি এবং ১০টির মতো থিয়েটার ও অ্যাম্ফিথিয়েটার।এখানে শিশুদের জন্য নির্ধারিত রয়েছে একটি বিশেষ সেকশন। যেখানে থাকবে তাদের পাঠোপযোগী বই। নিউজ উইকের এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, শুধু শিশুদের জন্যই রয়েছে চার লাখ বইয়ের বিশাল সংগ্রহ।

এই লাইব্রেরিতে রয়েছে মুভি থিয়েটার, সায়েন্স হল, ক্লাসরুম, একটি রেস্টুরেন্ট এবং একটি প্রার্থনাঘর। আর মনোরম পরিবেশে পড়ার জন্য লাইব্রেরির ছাদে রয়েছে সবুজ পার্ক।চলতি বছরের জুলাইয়ে উদ্বোধনের সময় তেহরানের মেয়র মোহাম্মদ বাকার ক্বালীবাফ বলেছিলেন, এটি আমাদের দেশের জন্য একটি বড় সাংস্কৃতিক আয়োজন। এই সাংস্কৃতিক ও শিক্ষামূলক সুযোগ গ্রহণ করে শিশুরা যথাযথ ভাবে বেড়ে উঠবে।তেহরান বুক গার্ডেন প্রতিষ্ঠার প্রথম প্রস্তাব এসেছিল ২০০৪ সালে। তেহরান আন্তর্জাতিক বইমেলার আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তার কারণে এই প্রস্তাবটি এসেছিল। বিভিন্ন বই বাজেয়াপ্ত ও নিষিদ্ধ করা নিয়ে ইরানকে আগে সমালোনার শিকার হতে হয়েছে। সম্প্রতি ইরানের  দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আসছে বলে মনে করা হচ্ছে।

গত ২০১৫ সালের তেহরান আন্তর্জাতিক বইমেলাতে শীর্ষ প্রকাশকদের সঙ্গে কথা বলেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনী। এর মাধ্যমে এই ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়েছিল যে ইসলামিক রিপাবলিকে প্রকাশনার যে বিধি-বিধান রয়েছে তা  শিথিল হচ্ছে। দ্য ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে হাসান রুহানীর সরকারের ব্যাপক প্রশংসা করা হয়েছে।গিনেজ বিশ্ব রেকর্ড অনুযায়ী, ১৯৯৯ সালের পর থেকে বিশ্বের সব থেকে বড় লাইব্রেরি হচ্ছে নিউইয়র্ক শহরের ফিফথ এভিনিউয়ের বার্নেস এন্ড নোবেল। এটি প্রায় এক লাখ ৫৪ হাজার স্কয়ার ফিট জায়গা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত। যেখানে ১২ মাইল দীর্ঘ জায়গা জুড়ে বই রাখার জন্য ব্যবহৃত সেলফ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই লাইব্রেরি থেকে তেহরান বুক গার্ডেন প্রায় তিনগুন বড়।