নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল ২০০০ সালে। খরচ হয়েছে ১ হাজার ২০০ কোটি মার্কিন ডলার। কাজ করেছেন প্রায় ২ হাজার ৪০০ শ্রমিক। অবশেষে সম্পন্ন হয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম এবং গভীরতম সুড়ঙ্গ রেলপথ বা টানেল। প্রকৌশলবিদ্যার এই বিস্ময়কর অর্জনের গৌরব সুইজারল্যান্ডের। দেশটিতে আগামী বুধবার উদ্বোধন হচ্ছে ৫৭ কিলোমিটার লম্বা ওই টানেল। আল্পস পর্বতমালায় নির্মিত এই টানেলের ভেতর দিয়ে দিনে ৩২৫টি যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেন চলাচল করবে। প্রতিটি ট্রেন ঘণ্টায় ২৪১ কিলোমিটার বেগে মাত্র ২০ মিনিটে ওই সুড়ঙ্গপথ অতিক্রম করবে। গথার্ড বেস টানেল নামের ওই রেলপথের কয়েকটি অংশের অবস্থান আল্পসের চূড়া থেকে সোয়া দুই কিলোমিটার নিচে। গভীরতার হিসাবে এটি বিশ্ব রেকর্ড। এত দিন বিশ্বের দীর্ঘতম সুড়ঙ্গপথের রেকর্ডটি ছিল জাপানের সেইকান টানেলের, যার দৈর্ঘ্য গথার্ড বেসের চেয়ে তিন কিলোমিটারেরও কম।ইউরোপের কেন্দ্রস্থলে মানুষের যাতায়াতের ধরন পাল্টে দেবে সুইজারল্যান্ডের নতুন টানেলটি। ৭ হাজার ফুট উঁচু গথার্ড পর্বতের ভেতর দিয়ে এটি বানাতে প্রায় ২ কোটি ৮০ লাখ টন পাথর খুঁড়ে বের করতে হয়েছে। ১৯৪৭ সালে সুইস প্রকৌশলী কার্ল এদুয়ার্দ গ্রুনে প্রথম ওই টানেল নির্মাণের ধারণা দিয়েছিলেন। পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নের অর্থায়ন নিয়ে ১৯৯৮ সালে ভোটাভুটি হয়। তখন ৬৪ শতাংশ সুইস ভোটার এ প্রকল্পের পক্ষে মত দেন। নতুন টানেলের ভেতর দিয়ে সুইজারল্যান্ডের জুরিখ থেকে ২ ঘণ্টা ৪০ মিনিটে ইতালির উত্তরাঞ্চলীয় মিলান শহরে পৌঁছানো সম্ভব হবে। ফলে এ রেলপথে ভ্রমণে এখনকার চেয়ে প্রায় এক ঘণ্টা সময় বাঁচবে। কমবে পরিবেশদূষণও। সুইস রেলওয়ে বিভাগ বলছে, টানেলটি নির্মাণের ফলে তাদের যাত্রীসংখ্যা প্রতিদিন ৯ হাজার থেকে বেড়ে ২০২০ সালে ১৫ হাজারে পৌঁছাবে।
বুধবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ, ইতালীয় প্রধানমন্ত্রী মাত্তেও রেনজি এবং সুইস কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন বলে জানানো হয়েছে। নতুন টানেলটি পুরোদমে চালু হবে আগামী ডিসেম্বরে।
No comments:
Post a Comment