আজব পৃথিবী

Tuesday, January 24, 2017

সবচেয়ে নীরোগ মানুষ

সুখী জীবনের একটি উৎস অবশ্যই নীরোগ জীবন। সেই বিচারে উত্তর পাকিস্তানের গিলগিট-বালটিস্তানের অন্তর্গত হুনজা প্রদেশে বসবাসকারী মানুষদের সুখীতম বলে বিবেচনা করাই যায়। কারণ, তারা এমন একটি সম্প্রদায় যারা কখনো অসুস্থ হন না। আর তাদের কেউ কখনো ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন বলেও শোনা যায়নি।হুনজা নারীদের মধ্যে এমনও কেউ কেউ আছেন যারা ৬৫ বছর বয়সেও সন্তানের মা হয়েছেন। প্রবল ঠাণ্ডার মধ্যেও তারা নিয়মিত ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করেন হুনজারা। তাতেও সচরাচর সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হতে দেখা যায় না তাদের।কিন্তু হুনজাদের এই নীরোগ জীবনের রহস্যটা কী? হুনজারা বলেন, উপত্যকায় নিজেরা যা চাষ করেন, কেবল সেই শাকসবজিই খান। জোয়ার, বাজরা, বাদাম নিজেরাই চাষ করে ঘরে তোলেন হুনজারা। এছাড়াও তাদের জীবনযাপনের প্রয়োজনে প্রতিদিন প্রচুর হাঁটতে হয়। সেটিও তাদেরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া হুনজাদের রীতি হলো, প্রতি বছর ফল চাষ শুরু করার আগে ২ থেকে ৪ মাস উপবাস পালন করা। সেই রীতিও তাদের শরীরের উপকার করে বলে মনে করেন ডাক্তররা।
কিন্তু একটি সম্প্রদায় কীভাবে সম্পূর্ণ ক্যানসার-মুক্ত হতে পারে? আসলে হুনজারা প্রচুর পরিমাণে অ্যাপ্রিকোট বা খোবানি নামের ফল খান। তাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় খোবানি থাকেই। এই খোবানিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে বি-১৭ ভিটামিন। এই ভিটামিন ক্যানসার প্রতিরোধে বিশেষ সহায়ক বলে জানান ডাক্তাররা। শুধু‌ নীরোগ নয়, হুনজারা দীর্ঘ জীবনেরও অধিকারী। হুনজাদের মধ্যে কেউ কেউ দেড়শো বছরও জীবিত থেকেছেন বলে শোনা যায়। ১৯৮৪ সালে সৈয়দ আবদুল বুন্দু নামের এক হুনজা ভদ্রলোক লন্ডন এয়ারপোর্টে প্লেন থেকে নামেন। এয়ারপোর্টের কর্মচারীরা তার পাসপোর্ট দেখে হতবাক হয়ে যান। কারণ তার পাসপোর্টে জন্মসাল লেখা ছিল ১৮৩২।সত্যিই আবদুল বুন্দু ১৫২ বছর বয়সে লন্ডন পাড়ি দিয়েছিলেন কি না সে বিষয়ে বিতর্ক থাকতেই পারে, কিন্তু হুনজারাই যে পৃথিবীর সবচেয়ে নীরোগ স্বাস্থ্যের অধিকারী সেই নিয়ে সন্দেহ নেই। 

অদ্ভুত এক শিশুর জন্ম

এবার চার পা আর দুই পুরুষাঙ্গ-সহ অদ্ভুত এক শিশুর জন্ম হল। গেলো শনিবার ভোর ৪ টার সময় ভারতের কর্নাটকের বল্লারির স্থানীয় এক হাসপাতালে শিশুটির জন্ম হয়। পরে ওই শিশুটিকে অস্ত্রোপচারের জন্য রায়চরের বিজয়নগর ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সে ভর্তি করানো হয়েছে। পরিস্থিতি খুব জটিল হওয়ায় কী ভাবে অস্ত্রোপচার করলে তাকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায়, তা নিয়ে মেডিক্যাল বোর্ড বসানো হয়েছে। তবে ওই শিশুটির পরিবার অস্ত্রোপচারের জন্য প্রথমদিকে রাজি ছিল না।শিশুটির মা তেইশ বছর বয়সি ললিতাম্মার বিশ্বাস বলেন, সে ঈশ্বরের আশীর্বাদ। অস্ত্রোপচার করা উচিত হবে না। পরে চিকিৎসকেরা তাঁকে বোঝান।দিভাকর গাড্ডি নামে এক চিকিৎসক জানান, শিশুটির চারটি পা আর দুইটি পুরুষাঙ্গ ছাড়া শরীরের বাকি অংশ পুরোপুরি স্বাভাবিক রয়েছে। সে কারণে, বিশেষ করে পুরুষাঙ্গে অস্ত্রোপচার করে আলাদা করাটা খুবই জটিল। 

Monday, January 23, 2017

মেলায় বিক্রি করা হয় কুমারী মেয়ে

বাবা-মা দাঁড়িয়ে থেকে মেলায় মেয়ের জন্য দর হাঁকেন। বিবাহযোগ্য পাত্র বা তাঁর পরিবার পাত্রীর জন্য দর হাঁকেন। সওদা মঞ্জুর হলে মধুরেণ সমপায়েৎ।এ এক অদ্ভুত মেলা।সদ্য যৌবনপ্রাপ্ত মেয়ে থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের মহিলারা এই মেলায় অংশ নেন স্রেফ জীবনসঙ্গীকে খুঁজে বের করতে। তবে শর্ত একটাই, বিবাহেচ্ছু মহিলাদের কুমারী হওয়াটা বাধ্যতামূলক। 
আসলে বুলগেরিয়ার স্তারা জাগোরা নামে এই অঞ্চলের রোমা জনগোষ্ঠীর মহিলারা এভাবেই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। রোমা জনজাতি মূলত তামার বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি করে থাকে। এটাই এদের রুজি-রুটি। বুলগেরিয়াতে এদেরকে অনেকে কালাইদঝি বলেও ডাকে।দারিদ্র্য আর অনটন এদের নিত্যসঙ্গী। ফলে, বিবাহের মতো ব্যয়বহুল আনুষ্ঠানের আড়ম্বর এদের পক্ষে সম্ভব হয় না। তাই, এই মেলাই রোমা জনজাতির কাছে জীবনসঙ্গিনী খুঁজে পাওয়ার একমাত্র জায়গা। পাত্রীর সাজে মেলায় আসা মহিলাদের শুধু পছন্দ করলেই হবে না, পুরুষদের এর জন্য খসাতে হয় ট্যাঁকের কড়িও। কারণ, যে পুরুষের যে মহিলাকে জীবনসঙ্গিনী হিসাবে পছন্দ হবে, তার জন্য তাকে যথার্থ দাম দিতে হয়। কয়েক লক্ষ টাকা পর্যন্ত দর ওঠে মেলায় পাত্রী হিসাবে যোগ দেওয়া মহিলাদের।   
কোন পাত্রী কেমন দর পাবেন, তা নির্ভর করে তাঁর সৌন্দর্য থেকে শুরু করে সাজপোশাক, আচার ব্যবহারের উপরে। মেলার নিয়ম অনুসারে, মেয়েরা যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন অথবা মেলার জন্য প্রস্তুত মঞ্চেও নিজেদের পাত্রী হিসাবে তুলে ধরতে পারেন। মঞ্চে ওঠা মেয়েদের জন্য নিলামের মতো দরও হাঁকাহাঁকি হয়। আবার পুরুষরা মঞ্চে থাকা মহিলাদের সঙ্গে সেখানে নাচা-গানাতেও অংশ নিতে পারেন। এরপরই পছন্দের মহিলার জন্য দর হাঁকতে পারেন তিনি।    
এই মেলায় অংশ নিতে মেয়েদের সাজপোশাকও হতে হয় চটকদার। এখানে নাবালক দম্পতি দণ্ডণীয় অপরাধ হিসাবে গণ্য হয় না। ফলে, ১৩ বছরের মেয়ের সমবয়সি পুরুষসঙ্গী এখানে একেবারেই বিরল নয়। এমনও দেখা গিয়েছে, বাবা-মায়েরা ছেলে-মেয়েকে অল্প বয়সেই এই মেলার অংশগ্রহণের জন্য নিয়ে এসেছে। কারণ, বাবা-মায়েদের ধারণা, বেশি দেরি করলে হয়তো ছেলে-মেয়েকে সারা জীবন চিরকুমার বা চিরকুমারী হয়েই কাটাতে হবে। বছরে চার বার এই মেলা বসে। সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় বসন্তের মেলা। 

Monday, January 16, 2017

এক গ্রামে ৬০ রানি

ভারতের একটি রাজ্য নাগাল্যান্ডের লৌঙ্গা অঞ্চলের রাজার নাম অঙ্গ নগোবাঙ্গ। সবমিলিয়ে ৭৫টি গ্রাম নিয়ে তার রাজত্ব। সেই রাজার রানির সংখ্যা কিন্তু ৬০ জন। শুনতে অবাক লাগলেও ঘটনা সত্য। পাহাড়ে ঢাকা এই অঞ্চলে সাজানো পরিপাটি কয়েকটি বাড়ি রয়েছে। এখানে বাস করে কোন্যাক উপজাতি। তাদের রাজপরিবারটি খুব ছোট নয়। রাজপরিবারে রানির সংখ্যাই তো ৬০ জন। এখানকার এক রাজপুত্র রয়েছেন আবার মিয়ানমার সেনাবাহিনীতে। তবে এ অঞ্চলের জনসংখ্যা খুব বেশি নয়। এর অর্ধেক ভারতের, অর্ধেক মিয়ানমারের অংশ।
এ অঞ্চলের বাসিন্দাদেরও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। তারা ভারতের বাসিন্দা হলেও অনায়াসেই যেতে পারেন মিয়ানমারে। প্রকাশ্যেই সীমান্ত অতিক্রম করতে পারেন। এ জন্য কোনো ভিসার প্রয়োজন হয় না। সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে, দু’দেশের সীমান্ত ছুঁয়ে গেছে এ অঞ্চলের রাজপ্রাসাদ। তাই রাজপরিবারের সদস্যদের খেতে যেতে হয় মায়ানমারে। আর রাতে শুতে হয় ভারতে। তবে রাজপরিবারই শুধু নয়, পুরো লৌঙ্গা অঞ্চলের সবাই পেয়েছেন দ্বৈত নাগরিকত্ব। তাই দু’দেশেই তাদের অবাধ যাতায়াত রয়েছে। 

Sunday, January 15, 2017

গাড়ির বদলে এরোপ্লেন

বাড়ির পাশে গ্যারেজ, আর সেই গ্যারেজে সুন্দর একখানা গাড়ি। এমনটাই দেখতে অভ্যস্ত আমরা। কেউ কেউ বিভিন্ন মডেলের একাধিক গাড়িও রাখেন। কিন্তু, দৃশ্যটা যদি এমন হয় যে, প্রতি বাড়িতে গাড়ি নয়, আছে একটি করে এরোপ্লেন, তাহলে কেমন হবে? গল্প নয়, পৃথিবীর বুকে এমন শহরও রয়েছে, যেখানে বাড়িতে বাড়িতে গ্যারেজ নয়, রয়েছে হ্যাঙ্গার, আর সেখানে শোভা পাচ্ছে ব্যক্তিগত প্লেন। আমেরিকার ফ্লোরিডার স্প্রুস ক্রিক শহরের অধিকাংশ বাড়িতে রয়েছে অন্তত একটি করে এরোপ্লেন। ৫০০০ জনের মতো বাসিন্দা থাকেন এই শহরে, রয়েছে ১৩০০-র মতো বাড়ি, আর ৭০০টির মতো এরোপ্লেন। শহরে রয়েছে ৪০০০ ফুট লম্বা এবং ৫০০ ফুট চওড়া একটি রানওয়ে, যেখানে দৌঁড় দিয়ে আকাশে উড়ে যেতে পারে বাসিন্দাদের এরোপ্লেনগুলি। সেই সঙ্গেই এখানে রয়েছে বেশ কিছু এয়ারক্লাব, এরোপ্লেন ভাড়া দেওয়ার সংস্থা, ফ্লাইট ট্রেনিং শেখানোর বন্দোবস্ত, এবং ২৪ ঘণ্টার কড়া সিকিউরিটি ব্যবস্থা। অনেক নামীদামি লোকই বিভিন্ন সময়ে বাস করেছেন স্প্রুস ক্রিকে। তাদের মধ্যে আছেন হলিউড অভিনেতা জন ট্র্যাভোল্টা। কিন্তু তার বোয়িং ৭০৭-এর ইঞ্জিনের গর্জন এতটাই বেশি ছিল যে, প্রতিবেশীদের অভিযোগের ধাক্কায় তাকে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে হয়।স্প্রুস ক্রিকের বাড়িতে বাড়িতে দেখা মেলে বিচিত্র সব এরোপ্লেনের। বোয়িং তো রয়েছেই, পাশাপাশি কেসনাস, পাইপার্স, পি-৫১ মাস্টাং, ফরাসি ফগ ম্যাজিস্টার কিংবা রাশিয়ান মিগ-১৫ এর মতো প্লেনেরও দেখা মিলবে বাড়িগুলির লাগোয়া হ্যাঙ্গারগুলিতে। কিন্তু কীভাবে একটি এলাকার প্রায় প্রত্যেক বাসিন্দা এরোপ্লেনের মালিক হতে পারেন? তাহলে কী এটাই বিশ্বের সবচেয়ে ধনী শহর? আসলে, যারা ব্যক্তিগত প্লেনে যাতায়াত করার মতো বিত্তের অধিকারী, তারাই নানা সুযোগ সুবিধার কথা বিবেচনা করে থাকতে আসেন স্প্রুস ক্রিকে। তাদের অধিকাংশই পেশাদার পাইলট। এ ছাড়াও রয়েছেন ডাক্তার, আইনজীবী, কিংবা জমি কেনাবেচার ব্যবসায়ী। প্রত্যেক রবিবার এখানকার বাসিন্দারা স্থানীয় রানওয়েটির কাছে নিজের নিজের প্লেন নিয়ে সমবেত হন। তার পর ছোট ছোট দলে উড়ে যান নিকটবর্তী এয়ারপোর্টটিতে প্রাতঃরাশ সারতে। এই জনপ্রিয় ঐতিহ্যটি এখানকার বাসিন্দাদের কাছে ‘স্যাটারডে মর্নিং গ্যাগেল’ নামে পরিচিত। 

বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ

ইন্দোনেশিয়ার মবাহ গোথো এখন সংবাদের শিরোনাম। কেননা, সম্প্রতি তিনি নিজের ১৬৪তম জন্মদিনপালন করলেন। মিডিয়া শুধু খবরটিই দেয়নি, এর সাপেক্ষে পেশ করেছে উপযুক্ত প্রমাণও।প্রমাণানুযায়ী, ১৮৭০ সালের ৩১ ডিসেম্বর তার জন্ম। ইন্দোনেশিয়ার রেকর্ডও তাই বলছে। কিন্তু আশ্চর্য এ বিষয়ে গিনেসবুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে কোনও তথ্য নেই।সব দাবি সত্য হলে মবাহই হবেন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বয়সী জীবিত ব্যক্তি। বর্তমানে খেতাবটি রয়েছে ফরাসি জ্যাঁনেক্যালমেন্টের। মৃত্যুকালে সেই ব্যক্তির বয়স হয়েছিল ১২২ বছর। তবে মবাহ এখনও জীবিত। তিনি গত ৩১ ডিসেম্বর জন্মদিন পালনও করলেন সমারোহ করে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। এক ফুঁতেই নিভিয়ে দেন সব মোমবাতি। তার দম দেখে উপস্থিত সকলেই যারপনারই বিস্মিত। জন্মদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন তার নাতিপুতি, তাদের সন্তানরাও।কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে দীর্ঘ আয়ু রহস্য কী? তার উত্তর- খাদ্যাভ্যাস। সেই কবে, ১৯৯২ সাল থেকেই তিনি নাকি মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিলেন। এমনকী সে-সময় তৈরি হয়েছিল তাঁর সমাধিফলকও। তারপরও বছর কেটে গেছে আও ২৪ বছর।এখনও তিনি বহাল তবিয়তে জীবিত। চোখে ভালো দেখেন না বলে মবাহ টেলিভিশন দেখেন না, তবে রেডিও শুনেই তার সময় কাটে। 

অন্য রকম এক সৌদি রাজকুমারী

সৌদি আরবে নারীদের জীবন কাটাতে হয় নিয়মের নানা বেড়াজালের মধ্যে। এই দেশটিতেই সব প্রথা ভেঙে ভিন্ন রকম জীবন কাটান রাজকুমারী আমিরাহ আল তাউইল।রাজকুমারী আমিরাহর জন্ম ১৯৮৩ সালের ৬ নভেম্বর, সৌদি আরবের রিয়াদে। বেড়ে উঠেছেন সেখানেই। তবে তিনি শুধু ছবির সুন্দর রাজকুমারী হয়েই বেঁচে থাকতে চাননি। আত্মনিয়োগ করেছেন নারীর অধিকার ও ক্ষমতায়ন অর্জনে। ইতিমধ্যে জনসেবামূলক কাজ করে নজর কেড়েছেন তিনি। যে দেশে নারীদের কঠোরভাবে পর্দা করতে হয়, সেখানে তিনি পশ্চিমা পোশাকে ঘুরে বেড়ান। তৈরি করেছেন নিজস্ব স্টাইল।রূপকথার রাজকুমারীর জীবনে যেমন রাজকুমার এসে জীবন বদলে দেয়; আমিরাহর জীবনেও তেমনটাই হয়েছে। মাত্র ১৮ বছর বয়সে তিনি প্রেমে পড়েন প্রিন্স আলওয়ালেদ বিন তালালের। তাঁদের বয়সের ব্যবধান ছিল ৩২ বছর। আর আলওয়ালেদ তত দিনে দুবার বিয়ে করে ফেলেছেন। কিন্তু কিছুই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। ২০০১ সালে বিয়ে করেন তাঁরা। 
বিয়ের পর আমিরাহ শুধু প্রিন্স আলওয়ালেদের স্ত্রী হিসেবে থাকতে চাননি। তিনি আলওয়ালেদ বিন তালাল ফাউন্ডেশনসের ভাইস চেয়ারপারসন হন। আর তখন থেকেই তিনি পাদ-প্রদীপের আলোতে আসতে শুরু করেন। দাবি তোলেন নারীদের অধিকারের। পাশে দাঁড়িয়েছেন দরিদ্র, নারী ও শিশুদের। তিনি এখন পরিচিত মানবতাবাদী, উদ্যোক্তা, ফ্যাশন আইকন, সুবক্তা ও টাইম এন্টারটেইনমেন্ট হোল্ডিংয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে। তাঁর প্রতিষ্ঠান তরুণকেন্দ্রিক গণমাধ্যম ও প্রযুক্তিশিল্পে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে, যা সৌদি সমাজ পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ছাড়া তিনি তাসামি সোশ্যাল ইনিশিয়েটিভস সেন্টারের সভানেত্রী ও অন্যতম উদ্যোক্তা। প্রতিষ্ঠানটি সৌদি আরবজুড়ে বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজ করে থাকে। 
আল আরাবিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাজকুমারী আমিরাহ সৌদি নারীর স্বাধীনতার ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের শক্তির কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সৌদি নারীরা বাস্তব জগতে নিজের মনের কথাগুলো বলার সুযোগ পায় না। সেই কথাগুলো বলার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম একটি উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম, যেখানে নারীরা সমান সুযোগ পায় নিজেকে প্রকাশ করার। তবে এখানেও নারীকে নানা বিপত্তির মুখোমুখি হতে হয়, বিশেষ করে বিতর্কিত ব্যক্তিরা যখন নারীর বিরুদ্ধে ক্রমাগত আপত্তিকর কথা বলে যান। কিন্তু এরপরও কোনো দাবির পক্ষে জনমত গড়ে তোলার জন্য নারীদের ভালো প্ল্যাটফর্ম এটি।
তবে নিজের জীবনে একটি ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পড়ে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটাতে হয় আমিরাহকে। স্বামী পাশে থাকলেও তাঁর চলাফেরা-কর্মকাণ্ড নিয়ে আপত্তি তুলেছিল শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তাঁর দেবর প্রকাশ্যে স্বামীকে হুমকি দিয়েছিলেন, স্ত্রীকে (আমিরাহ) সামলাতে না পারলে কঠিন ঝামেলায় পড়তে হবে। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটান, ২০১৩ সালে। তবে সাবেক স্বামীর সঙ্গে সুসম্পর্ক আছে বলে দাবি তাঁর। 




রাজধানী নেই যে দেশে

পৃথিবীর সব দেশেরই একটি করে রাজধানী থাকে। যেখান থেকে দেশটির প্রশাসনিক কাজকর্ম পরিচালনা করা হয়ে থাকে। কিন্তু একমাত্র এই দেশটিতে নেই কোন রাজধানী!দেশটির নাম নাউরু। আরেক নাম প্লিজ্যান্ট আইল্যান্ড নামেই পরিচয়। চোখজুড়ানো নৈসর্গিক দৃশ্য। পৃথিবীর একমাত্র দেশ এটাই, যার কোন সরকারি রাজধানী নেই। আয়তনের বিচারে পৃথিবীর তৃতীয় ক্ষুদ্রতম দেশ। জনসংখ্যার বিচারে দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম।নাউরুর রাষ্ট্রীয় নাম ‘নাউরু প্রজাতন্ত্র’। পাপুয়া নিউগিনির উত্তর-পূর্ব দিকে প্রশান্ত মহাসাগরের একটি দ্বীপ নাউরু। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে দ্বীপটি জার্মানি দখল করে নেয়।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপান এটিকে দখল করে। ১৯৬৮ সালের ৩১ জানুয়ারি দেশটি জাপানের কাছ থেকে পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে। দেশটির জনসংখ্যা প্রায় ১৩ হাজার। আয়তন মাত্র ২১ বর্গকিলোমিটার। মুদ্রার নাম অস্ট্রেলীয় ডলার। এ দেশের বেশির ভাগ মানুষ খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী। শিক্ষার হার ৯৯ শতাংশ।

ভদ্র দানব

প্রতিদিন তিনি ১০ হাজার ক্যালোরি গ্রহণ করেন! এরমধ্যে ৩৬টি ডিম থাকে সকালের নাস্তায়, ৭ পাউন্ড মাংস, ৫ লিটার দুধ এবং আরও তো রয়েছেই। খাদ্যতালিকার এই বিস্ময়কর বহর যার, শারীরিক অবয়বেও ঠিক ততটাই বিশাল তিনি। ৬ ফুট ৩ ইঞ্চি উচ্চতার এই ব্যক্তিটির ওজন ৪৩০ কেজিরও মতো। পাকিস্তানের হাল্ক নামে পরিচিত পাওয়া এই অতিকায় মানুষটির নাম আরবাব খাইজার হায়াত। (সূত্র: মেইল অনলাইন)এমন বিপুল খাদ্যাভাস ও বিশালাকায় শরীর নিয়ে কোন সমস্যায় পড়তে হয়না ২৫ বছর বয়সী এই তরুণের। এই ‘ভদ্র দানবের’ জনপ্রিয়তাও কিন্তু কোন অংশেই কম নয়। তার সাথে একটি সেলফি তুলতে দূর দূরান্ত থেকে শত শত লোক প্রতিদিনই তার বাসায় আসে।স্থানীয়দের মাঝে তার ‘পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তির’ পরিচিতি হায়াত ছড়িয়ে দিতে চান বিশ্বে, হতে চান বিশ্বতারকা।
তার শক্তিমত্তার বিষয়টি একটি ভিডিওতেই বেশ স্পষ্ট, যেখানে বিপরীত দিকে ঘুরতে চাওয়া একটি ট্রাক্টরকে রশি দিয়ে টেনে আটকে রাখতে দেখা যায়। এছাড়াও একটি জাপানিজ চ্যাম্পিয়নশীপে ১০ হাজার পাউন্ডেরও বেশি ভার তুলেছেন বলে দাবি করেন তিনি।হায়াতের স্বপ্নও এই ভারোত্তলন বা রেসলিং জগতের তারকা হওয়ার। ভারোত্তোলনে চ্যাম্পিয়ন হতে চান তিনি। বলেন, “আমি চ্যাম্পিয়ন হতে চাই। আল্লাহকে ধন্যবাদ আমাকে এমন অবয়ব দেয়ার জন্য। আমি কিছুদিনের মধ্যেই ভারোত্তোলনের জগতে নাম লেখাবো।”পাকিস্তানের মারাদানের বাসিন্দা হায়াতের ওজন বাড়তে থাকে কিশোর বয়সেই। তখনই তিনি ভারোত্তোলনে আসার চিন্তা করেন এবং স্বেচ্ছায় ওজন বাড়াতে থাকেন বলে জানান। তিনি বলেন, “আমার ওজন নিয়ে কোন সমস্যা হয়না। তবে শক্তিমত্তায় বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে হলে আমাকে এ বিষয়ে নজর দিতে হবে।”“আমার তাৎক্ষণিক লক্ষ্য ওয়ার্ল্ড রেসলিং এন্টারটেইনমেন্টে (ডাব্লিউডাব্লিউই) প্রবেশ করা। ওজনের বিষয়টিতে আমি নজর রাখছি। এবং এ ব্যাপারে ডাক্তারের পরামর্শ নিচ্ছি।”
প্রতিবেশীদের মধ্যে এখনই তারকা হায়াত। পাকিস্তান জুড়ে তিনি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী বলে পরিচিত। প্রতিদিন শতশত লোক তার সাথে দেখা করতে তার বাড়িতে আসে এবং এই ‘ভদ্র দানবের’ সাথে সেলফি তোলে।হায়াত বলেন, “এখানকার লোকদের কাছ থেকে আমি অনেক ভালোবাসা ও প্রশংসা পাই। কিন্তু আমি এখানেই থেমে যেতে চাই না। আমি বিশ্ব তারকা হতে চাই ““পাকিস্তানে স্ট্রংম্যান বা ভারোত্তোলনে তেমন সুযোগ না থাকলেও আমি আশা করি শীঘ্রই এক্ষেত্রে পরিবর্তন আসবে।”

১৮ বছর আগে চুরি হওয়া নবজাতক উদ্ধার

ফ্লোরিডার জ্যাকসনভিল শহরের একটি হাসপাতাল থেকে ১৮ বছর আগে চুরি হওয়া এক নবজাতককে সাউথ ক্যারোলিনা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। কামিয়াহ মবলিকে ১৯৯৮ সালের জুলাই মাসে অপহরণ করা হয়েছিল। তাকে গোপন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ উদ্ধার করে।সাউথ ক্যারোলিনার ওয়াল্টারবরোর কর্তৃপক্ষ বলছে, এই অপহরণের জন্য গ্লোরিয়া উইলিয়ামস নামে ৫১ বছর বয়সী এক মহিলার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে। মিস মবলি এতদিন অন্য নামে পরিচিত ছিলেন এবং এই মিস উইলিয়ামসকেই মা বলে জানতেন। জ্যাকসনভিলের শেরিফ অফিস বলছে, ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে মিস মবলির পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে। সে পুরো সুস্থ, সবল, স্বাভাবিক একজন ১৮ বছরের তরুণী এখন।কর্মকর্তারা বলছেন, এই অপহরণের ঘটনাটি নিয়ে এর আগে অন্তত আড়াই হাজার 'গোপন সংবাদ' যাচাই বাছাই করেছেন তারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গত বছর পাওয়া একটি 'গোপন সংবাদে' কাজ হয়। মিস মবলি যখন অপহরণ হয়, তখন তার কোন ছবি ছিল না। বর্ণনা শুনে শিল্পীর আঁকা একটি ছবিই ছিল ভরসা। জ্যাকসনভিলের ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টারের একজন স্বাস্থ্য কর্মীর ছদ্মবেশে এক মহিলা মাত্র আট ঘণ্টা বয়সী মিস মবলিকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।তার মা সানারাকে ওই মহিলা এসে বলেছিল শিশুটির জ্বর হয়েছে এবং তার পরীক্ষা নিরীক্ষা প্রয়োজন। এই বলে সে মিস মবলিকে নিয়ে উধাও হয়ে যায়। সানারা তার সদ্য অপহৃত কন্যাকে উদ্ধারে তৎপর হন এবং ঘটনাটি গণমাধ্যমে ব্যাপক সাড়া জাগায়।যদিও মিস মবলির জন্মদাতা-জন্মদাত্রীকে খবরটি জানানো হয়েছে, খবর পেয়ে তারা 'উল্লসিত'ও হয়েছেন, কিন্তু কর্মকর্তারা বলছেন, মিস মবলি যেহেতু একজন প্রাপ্তবয়স্ক, ফলে তিনি কি করবেন সেটা এখন তার উপরেই নির্ভর করবে।"সে যখন অপহৃত হয়েছিল, তখন সে ছিল সদ্যোজাত শিশু, পুরো ব্যাপারটি বুঝে ওঠার জন্য তার এখন সময় প্রয়োজন। আমরা তার ব্যক্তিগত গোপনীয়তাকে সম্মান করি, আপনাদেরও করা উচিত", বলেন জ্যাকসনভিলের শেরিফ মাইক উইলিয়ামস। 

Sunday, January 8, 2017

ড্যান্সিং ফরেস্ট

গাছ, সেও নাকি আবার নাচে? বাল্টিক সমুদ্রের তীরে আছে এমনই এক জায়গা যেখানে গাছেরা নিয়েছে অদ্ভুত অবয়ব। বেড়ে উঠেছে এমন ভাবে যেন একেকটি গাছ একেক ভঙ্গিমায় নাচ করছে। কুরোনিয়ান স্পিট ন্যাশনাল পার্কে দেখা পাবেন এই গাছেদের। পার্কের কেয়ারটেকার ড্যান্সিং ফরেস্ট নাম দিয়েছেন বনটির। আর স্থানীয়রা নাম দিয়েছেন উন্মত্ত বন।ভিন্নধর্মী এই বনটি পাইন গাছের। কিন্তু চিরাচরিত পাইনের গুঁড়ির মত নয় এই গাছেদের গুঁড়ি। এরা বিভিন্নভাবে বাঁকিয়ে, কখনো বৃত্তাকারে, কখনো সর্পিল ভঙ্গিতে উপরে উঠে গেছে। বিভিন্ন ধরণের আকৃতি বনের মাঝে তৈরি করেছে ভিন্ন কিন্তু মজার এক আবহ। ভ্রমণকারীরা মনে করেন, ২০ বছরেরও বেশী বয়সী পাইন গাছেরা এরকম অদ্ভুত ভাবে নিজেদের বাঁকিয়ে নিচ্ছে। কয়েক বছর আগে পার্কে ম্যানেজার স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আহবান করেন এই বনের রহস্য উন্মোচন করার জন্য। কিন্তু নিশ্চিত কোন কারণ জানা যায় নি।নানান রকম প্রচলিত কথা আছে ড্যান্সিং ফরেস্টকে নিয়ে। কেউ মনে করেন, মাটির গঠনের কারণে এখানকার গাছেরা অদ্ভুত অবয়ব নেয়। আবার কেউ মনে করেন, এখানকার আবহাওয়া পজেটিভ এবং নেগেটিভ উভয় প্রকার এনার্জি বিরাজ করে। যার দ্বন্দ্বের কারণে এমনটা ঘটে। তবে সবচেয়ে স্বীকৃত মত হচ্ছে, সমুদ্রতীরবর্তী বনটির সারাক্ষণ শক্তিশালী বাতাসের সাথে লড়াই। এই বাতাসের কারণেই নিজেকে টিকিয়ে রাখতে এমন বাঁকিয়ে যায় তারা।কিন্তু কারণ যাই হোক, বনটি মজার। যে কোন ভ্রমণকারীর জন্যই এটি হতে পারে চমৎকার উপভোগ্য একটি অভিজ্ঞতা। 

পুরুষের গর্ভে ৪ মাসের সন্তান

হেডেন ক্রস। ব্রিটেনের প্রথম পুরুষ, যিনি মা হতে চলেছেন। গ্লুসেস্টরের বাসিন্দা হেডেন এখন ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বয়স ২০ বছর। হেডেন বর্তমানে আইনত একজন পুরুষ হলেও, তার জন্ম হয়েছিল নারী হিসেবে। মনের ডাক পেয়েছিলেন অনেক আগেই। পরে শারীরিকভাবেও পুরুষ হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে দেন হেডেন। চলে হরমোনের চিকিত্‍‌সা। আইনি দিক থেকেও জোটে পৌরুষের অধিকার। হেডেন ভেবেছিলেন, তার ডিম্বাণু সংরক্ষণ করে রেখে পরে তার থেকে সন্তানের জন্ম দেবেন। তবে ডিম্বাণু সংরক্ষণের জন্য ৪০০০ পাউন্ড খরচের ভার বহন করতে অস্বীকার করে ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিস।এরপরই সন্তানের জন্ম দেওয়ার জন্য শারীরিক রূপান্তরের প্রক্রিয়া কিছুদিনের জন্য স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেন হেডেন। ফেসবুকে খোঁজ চালিয়ে তিনি পেয়ে যান স্পার্ম ডোনারও। তার সাহায্যে প্রথম প্রচেষ্টাতেই এই ব্রিটিশ পুরুষ বর্তমানে অন্তঃসত্ত্বা। কিছুদিনের মধ্যে তিনি সন্তানের জন্ম দিতে চলেছেন। তিনিই হবেন ব্রিটেনের প্রথম পুরুষ যিনি সন্তানের জন্ম দেবেন।১৬ সপ্তাহের প্রেগন্যান্ট হেডেন দারুণ আনন্দে জানালেন, 'আমার সন্তানকে আমি সবকিছু দিতে চাই। আমিই হব সেরা বাবা। এটা একটা মিশ্রিত অনুভূতি।' লিঙ্গ পরিবর্তনের প্রক্রিয়া থামিয়ে হেডেনের সন্তানসম্ভবা হওয়ার পথে বাধ সেধেছিলেন চিকিত্‍‌সকরা। তাদের আপত্তির তোয়াক্কা না করে, স্তন ও গর্ভাশয় কেটে বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়াকে স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেন হেডেন। 

বিশ্ব রেকর্ড

বয়স তার শুধু শরীরের বেড়েছে, বাড়েনি মনের। কমেনি মনের জোর। তাই তো ১০৫ বছর বয়সেও তার নাতিপুতিরা তাকে যুবকই মনে করেন। কেনই বা তা মনে করবেন না। এই বয়সে যে তিনি করে ফেললেন বিশ্বরেকর্ড। শতবর্ষ পাড়ি দেওয়া এই 'যুবক' সাইক্লিং করে মাত্র এক ঘণ্টায় পাড়ি দিলেন ২২.৫৪৭ কিলোমিটার পথ।রবার্ট মারশন্ড নামের এই ব্যক্তির বাস ফ্রান্সে। কর্মজীবনের নানা দিক শেষ করে, বর্তমানে ভালবাসেন বই পড়তে। এক সময় কাজ করেছেন সে দেশের দমকলকর্মী হিসেবে। কখনও ট্রাক ড্রাইভার, কখনও বা শুধুমাত্র গাছ কেটে দিন কেটেছে তার। ৬৮ বছর বয়স থেকে এক নতুন শখ পুরণে উদ্যোগী হন রবার্ট মারশন্ড। সাইক্লিং। ছোটখাটো নানা প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে নিতে, এবারে তিনি গড়ে ফেললেন একেবারে বিশ্ব রেকর্ড। সাইক্লিং করে মাত্র  পথ অতিক্রম করেন এই বৃদ্ধ। প্যারিসের ভেলোড্রোম ন্যাশনাল ইনডোর ট্র্যাকে, ৯২টি ল্যাপে মাত্র এক ঘণ্টায় রবার্ট পাড়ি দেন ২২.৫৪৭ কিলোমিটার। রবার্ট নিজেই নিজের রেকর্ড ভাঙতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ১০ মিনিটের জন্য তা আর হয়ে উঠল না। তার কথায়, ‘আমি এখন প্রতীক্ষা করছি আমার প্রতিদ্বন্দ্বীর জন্য।শতবর্ষ পাড়ি দেওয়া রবার্ট শরীর ও স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে সাইক্লিং ছাড়া কী কী করেন? তেমন কিছুই নয়। নিয়মিত শরীরচর্চার সঙ্গে রোজ রাত ন’টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়েন তিনি। তার কোচ, জিরার্ড মিস্টলারের কথানুযায়ী, রবার্টের পরিমিত খাওয়া-দাওয়া, কোনও রকম নেশা না করাও তার সুস্থ থাকার অন্যতম কারণ। 

Saturday, January 7, 2017

শুধু বালি খেয়ে সুস্থ রয়েছেন

বয়স তাঁর ৭৮ বছর। কিন্তু সমবয়সি অন্য যে কোনও বৃদ্ধ বা বৃদ্ধার তুলনায় অনেক শক্তপোক্ত দেহ তাঁর। শরীরে এখনও থাবা বসাতে পারেনি জরা কিংবা অন্য কোনও বয়সঘটিত রোগ। এখনও কৃষিজমিতে কাজ করেন সকাল-সন্ধে। কিন্তু কুসমাবতী নামের এই মহিলার এমন সুস্বাস্থ্যের রহস্যটা কী? তাঁর নিজের দাবি, প্রতি দিন নিয়মিত বালি খাওয়ার অভ্যাসই তাঁর এই বার্ধক্যরূপী তারুণ্যের মূলে। শুনতে যতই অদ্ভুত লাগুক, বারাণসী নিবাসী কুসমাবতী বিগত ৬৩ বছর ধরে নিয়মিত বালি খেয়ে আসছেন। দিনে পাঁচ-ছ’ বার দু’ মুঠো করে বালি খান তিনি। এবং এই বিচিত্র অভ্যাসের ফলে তাঁর শরীর অসুস্থ হওয়ার পরিবর্তে বরং নীরোগ থাকে। কিন্তু কেন এমন অদ্ভুত অভ্যাস? কুসমাবতী দেবী জানালেন, তাঁর বয়স যখন বছর পনেরো, তখন এক বার দুরারোগ্য পেটের অসুখে শয্যাশায়ী হয়ে প়ড়েন তিনি। কোনও এক আত্মীয় পরামর্শ দেন, বালি খেলেই রোগমুক্তি ঘটবে। পরামর্শ শিরোধার্য করে বালি খেতে শুরু করেন কুসমাবতী। কয়েক দিনের মধ্যেই সেরে যায় রোগ। সেই শুরু। তার পর ৬৩ বছর কেটে গিয়েছে, কিন্তু বালি খাওয়ার অভ্যাস কুসমাবতী ছাড়েননি। তাঁর ধারণা, বালির মধ্যে এমন‌ কোনও গুণ রয়েছে, যা তাঁকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। কারণ তাঁর দাবি, নিয়মিত বালি খাওয়ার ফলেই এই বয়সেও একেবারে সুস্থ রয়েছে তাঁর দেহ। কিন্তু বালি খেতে ঘেন্না করে না? কুসমাবতী জানান, ‘তা কেন! বরং বালি বেশ ভালই খেতে। অনেকটা নুন-চিনির মিশ্রণ যেমন হয়, তেমনই নোনতা-মিষ্টি স্বাদ হয় বালির।’ কুসমাবতীর বাড়ির লোকেরা আপত্তি করেন না? বৃদ্ধার ছেলে রমেশ বললেন, ‘আপত্তি করব কেন? ছোটবেলা থেকেই তো মা-কে বালি খেতে দেখছি। আর কোনও দিন তো এর জন্য মায়ের শরীর খারাপ হয়েছে বলে দেখিনি। আর মা যে শুধু বালিই খান, তা তো নয়। অন্যান্য খাবারদাবারের পাশাপাশি কয়েক মুঠো বালিও খেয়ে নেন, অনেকটা ওষুধের মতোই। মায়ের বিশ্বাস, বালি খেলে শরীর ভাল থাকে। সেই বিশ্বাস যদি সত্যি হয়, তা হলে বালি খাওয়ায় বাধাই বা দেব কেন আমরা!’তা রমেশ নিজেও মায়ের দেখাদেখি বালি খাওয়া শুরু করেন না কেন? রমেশ হেসে বলেন, ‘আরে না না। ও সব আমাদের কম্ম নয়। মা খেতে পারেন, কারণ মায়ের নিশ্চয়ই কোনও আলাদা ক্ষমতা রয়েছে। আমরা বালি খেলে অসুস্থ হয়ে পড়ব।’রমেশ যা-ই বলুন, কুসমাবতীর ধারণা, নিয়মিত বালি খেলে শরীরের উপকার বই অপকার হয় না। এই ৭৮ বছর বয়সেও তাই মু‌ঠো মুঠো বালি গলাধঃকরণ করে চলেছেন তিনি। 

সেরা ক্রিকেট স্টেডিয়াম

বিশ্বের চতুর্থ দর্শনীয় খেলা হচ্ছে ক্রিকেট। ইংল্যান্ডে শুরু হওয়া এই খেলা এখন বিশ্বব্যাপী বেশ জনপ্রিয়। জনপ্রিয়তার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বব্যাপী তৈরি হয়েছে বিশ্বখ্যাত ক্রিকেট স্টেডিয়াম। ২০১৬ সালে বিশ্বসেরা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একটি তালিকাও করা হয়। আসুন জেনে নেই, কোন কোন স্টেডিয়াম ছিল সে তালিকায়। 

                                                   লর্ড ক্রিকেট গ্রাউন্ড
ইংল্যান্ডের লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডই বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্রিকেট স্টেডিয়াম। এই স্টেডিয়ামকে ‘হোম অব ক্রিকেট’ বলা হয়। স্টেডিয়ামটি বহু ইতিহাসের সাক্ষী। 
                                                           মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড
মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থিত। এটি বিশ্বের অন্যতম সুন্দর স্টেডিয়াম ও বহু ক্রিকেট ইতিহাসের সাক্ষী। 
                                                       সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ড
সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ড অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থিত। এই স্টেডিয়াম ক্রিকেট এবং ফুটবল খেলার জন্য বিখ্যাত। এখানে ফুটবল এবং ক্রিকেট উভয় খেলাই অনুষ্ঠিত হয়। 
                                                             ইডেন গার্ডেন
ইডেন গার্ডেন স্টেডিয়ামের অবস্থান ভারতের কলকাতায়। এটি ক্রিকেট দুনিয়ার অন্যতম একটি বিখ্যাত স্টেডিয়াম। 
                                                               দ্য ওভাল
দ্য ওভাল স্টেডিয়ামের অবস্থান লন্ডন। এই স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার প্রথম টেস্ট ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
                                                             দ্য ওয়ান্ডারার্স
দ্য ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়ামের অবস্থান সাউথ আফ্রিকা। এটি  সাউথ আফ্রিকার হোম ক্রিকেট স্টেডিয়াম। 
                                                              ইডেন পার্ক
ইডেন গার্ডেন ভারতে অবস্থিত হলেও ইডেন পার্ক স্টেডিয়ামের অবস্থান নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডে। এটি নিউজিল্যান্ডের অন্যতম বড় একটি স্টেডিয়াম। অত্যন্ত সুন্দর পরিবেশের জন্য এই স্টেডিয়াম সবার কাছে প্রিয়। 
                                                                দ্য ওয়াকা
দ্য ওয়াকা স্টেডিয়ামের অবস্থান অস্ট্রেলিয়ায়। এটি ১৯৭০ সাল থেকে টেস্ট ক্রিকেট ভেন্যু হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়। এর পাশে সাগর থাকায় বোলারদের জন্য এটি একটি সহায়ক স্টেডিয়াম। 
                                                       ধর্মশালা স্টেডিয়াম
ধর্মশালা স্টেডিয়ামটি হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালা শহরে অবস্থিত। এছাড়া ‘হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট সংস্থা স্টেডিয়াম’ নামেও পরিচিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১ হাজার ৪৫৭ মিটার উপরে এর অবস্থান। এর পেছনেই রয়েছে হিমালয় পর্বতমালা। যে কারণে এটি বিশ্বের অন্যতম সুন্দর একটি স্টেডিয়াম। 
                                                              ওল্ড ট্রাফোর্ড
ওল্ড ট্রাফোর্ড স্টেডিয়ামের অবস্থান ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারে। ম্যানচেস্টারের বিখ্যাত ফুটবল স্টেডিয়াম থেকে মাত্র পাঁচ মিনিটের দূরত্বে এই স্টেডিয়ামের অবস্থান। 

Sunday, January 1, 2017

পুরুষ-সঙ্গী ছাড়াই ৮টি সন্তান

সাত বছর আগে এক সঙ্গে আটটি সন্তান প্রসব করে খবরের শিরোনাম হয়েছিলেন বিবাহবিচ্ছিন্না এই তরুণী। এর পর অনেক ঝড়ঝাপটা বয়ে গিয়েছে তাঁর উপর দিয়ে। নিজের সন্তানদের ভরণ-পোষণের জন্য পর্ন ফিল্মে পর্যন্ত অভিনয় করতে হয়েছে তাঁকে। কিন্তু আজ তিনি কী করছেন, কেমন রয়েছে তাঁর সন্তানেরা? তাঁর প্রকৃত নাম নাতালি সুলেমান। কিন্তু দুনিয়া তাঁকে চেনে 'অক্টোমাম' হিসেবেই।  'অক্টো' অর্থে আট, আর 'মাম' তো মা। তাঁর এ হেন পরিচিতির সঙ্গত কারণও রয়েছে। ২০০৯ সালে এক সঙ্গে আটটি সন্তানের জননী হয়ে খবরের শিরোনামে এসেছিলেন তিনি। বিষয়টি শুনতে যতই আজগুবি লাগুক না কেন, সত্যিই এক সঙ্গে আটটি সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন নাতালি। এবং কোনও পুরুষ-সঙ্গীর সাহায্য ছাড়াই এতগুলি সন্তানের মা হয়েছিলেন তিনি। 
১৯৯৬ সালে মার্কিন এই মহিলার বিয়ে হয় মার্কো গুতিরেজের সঙ্গে। ২০০৬ সালে ডিভোর্সও হয়ে যায়। মার্কো নাতালিকে কোনও সন্তান দিতে পারেননি। সেটাই ছিল তাঁদের বিচ্ছেদের প্রধান কারণ। আনুষ্ঠানিক ডিভোর্সের অনেক আগে থেকেই দু'জনে আলাদা থাকতে শুরু করেছিলেন। সেই সময় থেকেই ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (আইভিএফ), অর্থাৎ সাধারণ ভাবে যাকে টেস্ট টিউব বেবি বলা হয়, সেই পদ্ধতিতে মা হওয়ার চেষ্টা চালাতে থাকেন নাতালি। ১৯৯৭ সালে, নাতালির বয়স যখন ২১, সেই সময় থেকেই ডাক্তার মাইকেল কামরাভার তত্ত্বাবধানে শুরু হয় চিকিৎসা। পরবর্তী বছর ছ'য়েকের মধ্যে ছ'টি সন্তানের (চারটি ছেলে দু'টি মেয়ে) জন্ম দেন নাতালি। ২০০৮ সালে জানা যায়, আগের আইভিএফ চিকিৎসার পরিণামে নাতালির গর্ভে ছ'টি ভ্রূণ নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রয়ে গিয়েছে। নাতালি ভ্রূণগুলিকে তাঁর জরায়ুতে সঞ্চারিত করার জন্য অনুরোধ করেন ডাক্তারকে। সঙ্গে যুক্ত হয় আরও দু'টি নতুন ভ্রূণ। সব মিলিয়ে ২০০৯ সালে মোট আটটি সন্তানের জন্ম দেন নাতালি। আমেরিকার মাটিতে সুস্থ এবং জীবিত অক্টোপ্লেটস-এর জন্ম দেওয়ার ঘটনা এই নিয়ে দ্বিতীয় বারের জন্য ঘটে।
 
এর পরেই আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে চলে আসেন নাতালি। কিন্তু সকলের অভিনন্দনের জোয়ারে যে তিনি ভেসে যাচ্ছিলেন, এমনটা নয়। আমেরিকায় সরকারি নিয়ম অনুসারে, অনাথা সিঙ্গেল মম-রা সরকারের কাছ থেকে সন্তানের মাথা পিছু একটা ভাতা পান। যখন সংবাদে প্রকাশ পায় যে, নাতালি বেকার, এবং চোদ্দটি সন্তানের জননী, তখন শুরু হয় বিতর্ক। সন্তানের জন্ম দিয়ে নাতালি আসলে নিজের রুজিরুটির বন্দোবস্ত করছেন, এবং সাধারণ করদাতাদের পকেট থেকে যাচ্ছে নাতালি এবং তাঁর সন্তানদের ভরণ-পোষণের অর্থ-- এমন বক্তব্য তুলে ধরে প্রতিবাদে সরব হন অনেকেই। নাতালির সন্তানধারণের কেস স্টাডি করার পরে, মেডিক্যাল বোর্ড অফ ক্যালিফোর্নিয়া ডাক্তার কামরাভার লাইসেন্স বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়। তাঁর বিরুদ্ধে রোগীকে বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।  এর পর কেটে গিয়েছে সাত বছর।
অনেক ঝড়ঝাপটা বয়ে গিয়েছে নাতালির উপর দিয়ে। নিজের সন্তানদের ভরণ-পোষণের জন্য পর্ন ফিল্মে পর্যন্ত অভিনয় করতে হয়েছে নাতালিকে। তবে এখন নিজের চোদ্দ ছেলে মেয়েকে নিয়ে সুখেই রয়েছেন নাতালি। সরকারি সাহায্যেই চলছে সংসার। ইতিমধ্যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পত্রপত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে নাতালিকে নিয়ে। বহু টেলিভিশন অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছে নাতালির মুখ। ডক্যুমেন্টারি তৈরি হয়েছে তাঁকে নিয়ে। একসময়ে যেমন চোদ্দটি সন্তানের জননী হওয়ার কারণে সমালোচিত হয়েছিলেন তিনি, পরবর্তী কালে তেমনই অনেকে তাঁর এই সাহসী সিদ্ধান্ত এবং অপার মাতৃস্নেহকে কুর্নিশ না করেও পারেননি।