আজব পৃথিবী

Thursday, December 31, 2015

সবচেয়ে বড় বিমান

ধারণক্ষমতার দিক দিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমানটির নাম অ্যান্টোনভ এএন-২২৫ ম্রিয়া। এটি তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন বা বর্তমান রাশিয়ায় নির্মিত বিমান হলেও এখন পর্যন্ত বিমানটির মতো বিশাল ধারণক্ষমতার কোনো বিমান নির্মিত হয়নি। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে ইন্টারেস্টিং ইঞ্জিনিয়ারিং।১৯৮৮ সালের ডিসেম্বর মাসে অ্যান্টোনভ এএন-২২৫ ম্রিয়া বিমানটি তার যাত্রা শুরু করে। এরপর ২৭ বছর পার হয়ে গেছে। প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিশ্বে নানা পরিবর্তন এসেছে। নিত্যনতুন ক্ষেত্রে প্রযুক্তির প্রভাব দেখা যাচ্ছে। এমনকি ২০১৩ সালে বিশ্বের সবচেয়ে বড় জাহাজ নির্মিত হয়েছে। কিন্তু এ বিমানটির আসন কেউ দখল করতে পারেনি।দীর্ঘদিন ধরে সবচেয়ে বড় বিমানের এ আসনটি দখল করে রাখাকে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের প্রমাণ বলেও মানছেন অনেকে। এ বিমানটির ডানার দৈর্ঘ্য ৮৮ মিটার বা ২৯০ ফুট। এ ছাড়া এর প্রস্থ ৮৪ মিটার বা ২৭৫ ফুট। বিমানটি ওড়ানোর জন্য কমপক্ষে ছয় জন ক্রু প্রয়োজন হয়।

১৯৮৮ সালের ২১ ডিসেম্বর অ্যান্টোনভ এএন-২২৫ ম্রিয়া বিমানটি প্রথম আকাশে ওড়ানো হয়। সে সময় বিমানটি নির্মিত হয়েছিল বুরান স্পেস শাটল ও তার রকেট বুস্টার পরিবহনের জন্য। পরবর্তীতে অ্যান্টোনভ এয়ারলাইন্স এটি বিশেষ মালামাল পরিবহনের জন্য ব্যবহার করছে।অ্যান্টোনভ এএন-২২৫ ম্রিয়া বিমানটিতে রয়েছে ৩২টি চাকা। এ চাকাগুলো টেক অফের সময় সর্বোচ্চ ৬৪০ টন ওজন নিতে পারে। তবে বিমানটিতে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ওজন নেওয়া হয়েছে ১৯০ টন প্রায়। যা একটি বিশ্বরেকর্ডও বটে। বিমানটি স্পেস শাটল পরিবহনের কাজেও ব্যবহৃত হয়েছে।এ ধরনের বিমান বিশ্বে একটিমাত্র নির্মিত হয়েছে। নির্মাতা সংস্থার পরিকল্পনা ছিল এ ধরনের আরেকটি বিমান তৈরি করার। তবে এ পরিকল্পনা অর্থাভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। তবে প্রতিষ্ঠানটি পরিকল্পনা করেছে দ্বিতীয় বিমানটি নির্মাণ দ্রুত শেষ করার। দ্বিতীয় বিমানটি নির্মিত হলে বিমানেই ২৫০ টন ওজন তোলা যাবে বলে আশাবাদী নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। সে বিমানটি নির্মাণে ৩০০ মিলিয়ন ডলার খরচ পড়তে পারে বলে জানিয়েছে তারা।

Wednesday, December 30, 2015

৮০০ বছর আগের মোবাইল

মোটা চশমাধারী কোনো ব্যক্তি যদি গম্ভীরমুখে আপনাকে বলে, ৮০০ বছর আগেও পৃথিবীতে মুঠোফোন ছিল, তখন কী ভাববেন আপনি? হয় হেসেই উড়িয়ে দেবেন, নয় ভাববেন, লোকটার মাথা খারাপ হয়ে গেল না কি। যা-ই ভাবুন, প্রত্নতাত্ত্বিকরা এমনই একটি মুঠোফোন আবিষ্কার করেছেন, যেটির বয়স আটশো বছরের বেশি।সম্প্রতি খননকার্য চালাতে গিয়ে অস্ট্রিয়া থেকে এই মুঠোফোনের খোঁজ পেয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। মুঠোফোনটির গায়ে রয়েছে সুমেরীয় লিখনশৈলী, যা কীলকাকার বর্ণমালা নামে পরিচিত।একটি ইউটিউব চ্যানেলে সদ্য আবিষ্কৃত প্রাচীন সেই ফোনের ফসিলের ভিডিও আপলোড করে লেখা হয়েছে, ‘এটা কী? উন্নত সভ্যতার নিদর্শন?’ এই আবিষ্কারের দৌলতে সায়েন্স ফিকশনের টাইম মেশিনকেও সত্য বলেই মনে করা হচ্ছে।  
ফোনের গায়ের সুমেরীয় লেখা প্রত্নতাত্ত্বিকদের কৌতূহল বাড়িয়েছে। কারণ, অনেক বছর আগেই কীলকাকার এই বর্ণমালা অবলুপ্ত হয়ে যায়। প্রাচীন মেসোপটেমিয়ায় এই হরফ দেখা গিয়েছিল। অস্ট্রিয়ার গবেষকদের ধারণা, ফোনটি ১৩০০ শতকের। বর্তমান ইরান ও ইরাকের লিপির সঙ্গে তারা অনেকও মিলও খুঁজে পেয়েছেন। তবে এটি মোবাইল ফোনই, না কি অন্য কোনো ডিভাইস, তা নিয়ে অবশ্য ধোঁয়াশাই রয়ে গেছে গবেষকদের মধ্যে। এই নিয়ে হইচই করছেন ইউএফও (আন-আইডেন্টিফাইড ফ্লাই অবজেক্ট) খোঁজকারীরাও, যারা মনে করেন প্রাচীন সভ্যতার সঙ্গে এলিয়েনদের যোগাযোগ ছিল। ভিনগ্রহের বাসিন্দারা এই পৃথিবীতেও আসত। তাদের হাতে ছিল এই প্রযুক্তি। হয়ত নিদর্শন হিসেবে তারা রেখে গেছেন পৃথিবীবাসীর জন্য।

সেদ্ধ করলেই ডিম হয়ে যাচ্ছে কালো

এটা কি 'ব্ল্যাক ম্যাজিক'? ফুটন্ত জলে ডিম দিলেই তা হয়ে যাচ্ছে কালো। অথচ খোলস ছাড়ালেই তা থাকছে অপরির্তিত। সাদা রঙের ফ্যাট অংশের ভিতরে গাঢ় হলুদ কুসুম। টেস্টটাও একই। জাপানের ‘Great Boiling Valley’-তে এই আজব কাণ্ড দেখে অবাক গোটা বিশ্ব। কীভাবে সম্ভব এটা? জাপানি ভাষায় একে বলা হয়-  ‘Kuro-Tamago’।আজ থেকে প্রায় ৩০০০ বছর আগে উৎপত্তি হয়েছিল এই ফুটন্ত উপত্যকা। হাকোন পর্বত (Mount Hakone) সৃষ্টির সময়েই এই উপত্যকার জন্ম। এখানকার জল এতটাই ফুটন্ত এবং এর মধ্যে রয়েছে সালফার ডাই-অক্সাইড ও হাইড্রোজেন সালফাইডের মত উপাদান। যে কারণে ডিম ঐ জলে দিলেই খোলসের রঙ হয়ে যাচ্ছে কালো। পর্যটকরা জাপানের এই হাকোন পর্বতে আসেন এই 'কালো ডিমের ম্যাজিক' দেখতেই। স্থানীয় মানুষ রহস্যময় কালো ডিমের নামকরণ করেছেন 'কুরো-তামগো'। ওখানকার মানুষের বিশ্বাস এই ডিম খেলই নাকি মানুষের আয়ু বাড়ছে। তবে এই বিশ্বাসের কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি এখনও পাওয়া যায়নি।

এলিয়েনের ডিম!

ভিনগ্রহের প্রাণি (এলিয়েন) নিয়ে বহুদিন আগে থেকেই জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। পৃথিবীর বাইরে সত্যিই কি রয়েছে কোনো বুদ্ধিমান প্রজাতির অস্তিত্ব- এ প্রশ্ন নিয়েও আছে বিভিন্ন বিতর্ক। অনেকের তো বিশ্বাস, এলিয়েনরা আমাদের পৃথিবীতে ঘুরেও গিয়েছে দুই একবার।তবে বিশ্বাস অবিশ্বাসের মাত্রা ছাড়িয়ে এবার যুক্তরাজ্যের একটি শস্যক্ষেতে সত্যিই পাওয়া গেল এলিয়েনের ডিম! অনেকের বিশ্বাস সেরমকই।এলিয়েন, ডিম, যুক্তরাজ্যকিছুদিন আগে যুক্তরাজ্যের একটি শস্যক্ষেতে পড়ে থাকতে দেখা যায় জেলির মতো দেখতে অদ্ভূত রকমের একটি ডিম। ডিমটি থেকে বাচ্চা ফুটে বের হওয়ার একটি ছবি টুইটারে পোস্ট করেন স্থানীয় বন সংরক্ষক ডেন হাওর। আর সাথে সাথেই ইন্টারনেট দুনিয়ায় ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে ছবিটি।কমেন্টে একজন লিখেছেন, ‘আমার আগেই ধারণা ছিল সব ছত্রাক জাতীয় জিনিসই বাইরের দুনিয়া থেকে আসে। এটি তাই প্রমাণ করলো!’তবে দেশটির গণমাধ্যম ডেইলি মিরর জানিয়েছে, এটি আসলে কোনো এলিয়েনের ডিম নয়। এটি বিরল প্রজাতির এক ধরনের গাছ, যা যুক্তরাজ্যে দেখা না গেলেও অন্য দেশে দেখা যায়।ডিমটি ফুটে ব্চ্চা বের হওয়ার এক ভিডিওতে দেখা যায়, জেলির মতো দেখতে স্বচ্ছ একটি ডিমের মধ্য থেকে লাঠির মতো কয়েকটি শাখা প্রশাখা বেরিয়ে আসছে।যুক্তরাজ্যের কিউ রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এটি মূলত এক ধরনের উদ্ভিদ। অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডে এগুলো দেখা যায়।

Sunday, December 20, 2015

গাছও হাঁটে!

ইকুয়েডরের রাজধানী কুইটো থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বের বন সুমাকো বায়োস্ফেয়ার রিজার্ভ। ইউনেস্কো ঘোষিত সংরক্ষিত এ বনটিকে বলা হয় ‘হার্ট অব দ্য ইউনেস্কো’।এই খানেই এক অদ্ভূত গাছের সন্ধান পেয়েছেন স্লোভাক ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সেস ব্রাতিস্লাভার জীবাশ্মবিদ পিটার ভ্রসাঙ্কসি। এক দিনে প্রায় ৩ ঘণ্টা গাড়িতে আর ১৫ ঘণ্টা নৌকায় চড়ে, পায়ে হেঁটে ও খচ্চরের গাড়িতে করে জঙ্গলের গভীরে প্রবেশ করে এগুলোর দেখা পান তিনি। এগুলো এক ধরনের পাম গাছ।এই বনের গাছগুলো জে আর আর টলকিনের মহাকাব্য ‘লর্ড অব দ্য রিংস স্যাগা’য় বর্ণিত গাছের মতো- সারা বন হেঁটে বেড়ায়! বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেন ভ্রসাঙ্কসি। শুরুতেই তিনি পান অনাবিষ্কৃত ৩০ মিটারের একটি জলপ্রপাত, নতুন একটি টিকটিকি ও ব্যাঙের প্রজাতি।
তারই প্রথম নজের আসা জলপ্রপাত
গাছগুলোর শিঁকড় থেকে জন্ম নেয় নতুন গাছ। এভাবেই গাছে ছেয়ে যায় পুরো বন। আর এ কারণেই এই গাছগুলোকে বলা হয় হেঁটে চলা গাছ।ভ্রসাঙ্কসি জানান, মাটি ক্ষয় হয়ে যাওয়ার কারণে গাছগুলোর শিঁকড় থেকে জন্ম নেয় নতুন নতুন শিঁকড়। নতুন শিঁকড়গুলো মাটির প্রায় ২০ মিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে এবং সেগুলো থেকে জন্ম নেয় নতুন গাছ।তিনি বলেন, ‘ঠিকমতো সূর্যের আলো এবং উর্বর মাটি থাকলে একটি গাছ জন্ম নিতে সময় লাগে প্রায় দুই বছর।’ভ্রসঙ্কসি জানান, দুই মাসের এ বিপজ্জনক এ অভিযানে তিনি প্রায় ১৫০ প্রজাতির নতুন জীবের সন্ধান পান। তবে এজন্য তাকে ১০ কেজি ওজন হারাতে হয়েছে!

Saturday, December 19, 2015

বক্ষের বাইরে হৃৎস্পন্দন

৬ বছরের ভিরসাভিয়া বরুণ, সত্যিই মিরাকেল শিশু! তার পুরো জীবনটাই একটা বড় লড়াই। মেয়েটি জন্মেছে বুকের ও পেটের বাইরে হার্ট ও অন্ত্র নিয়ে। তার হৃৎস্পন্দন দেখা ও শোনা যায়, কারণ তা বুকের বাইরে, পেটের কাছে রয়েছে।রাশিয়ায় জন্মেছে, কিন্তু এখন মায়ের সঙ্গে দক্ষিণ ফ্লোরিডায় চলে গিয়েছে ভিরসাভিয়া। জন্মের সময় থেকেই বিভিন্ন ধরণের শারীরিক অক্ষমতা নিয়ে জন্মেছে সে। সমীক্ষা বলছে, লক্ষের মধ্যে মাত্র ৫.৫ শতাংশ শিশুই এখনও পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্ত।ভিরসাভিয়ার হৃৎস্পন্দন দেখা যায় কারণ পেটের কাছে একটা জায়গায় হৃদয়টি তার কাজ করে, যা একটা পাতলা চামড়ার আস্তরণে ঢাকা। চিকিত্সার জন্যেই সে এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে। কারণ রাশিয়ার সমস্ত হাসপাতাল এই জটিল ধরণের রোগের জন্যে তার মাকে বারংবার ফিরিয়ে দিয়েছে। আপাতত দক্ষিণ ফ্লোরিডায় ইংরেজি শিখছে সে, যদিও শারীরিক অবস্থার জন্যে কোনও স্কুলে তাকে ভর্তি করা হয়নি। সেখানে এখন চিকিত্সা শুরু না হলেও, ছোট্ট মেয়েটি নাচ, গান, আঁকা নিয়ে মেতে রয়েছে। মা এবং মেয়ে আশা রাখে, সময়মতো তার সঠিক চিকিত্সাই হবে।

Monday, December 14, 2015

সাপ খেলার যাদুকর

সাপ নিয়ে সাপুড়েরা কত খেলাই না দেখায়! তারা দুই হাতে বীন বাজায় আর কোমর দুলায়। সঙ্গে ফনা তুলে নাচে তাদের পোষ মানা বিষধর সরীসৃপরা। এই তো সাপুড়েদের চিরায়ত কাজ কারবার। কিন্তু সাপুড়ে ইকবাল জগির কথা আলাদা। তিনি সাপ নিয়ে যে খেলা দেখান তা এককথায় অবিশ্বাস্য। অভিনব তো বটেই।
পাকিস্তানের বাসিন্দা ৩০ বছরের ইকবাল জগি কোনো সাধারণ সাপুড়ে নন। তিনি গত ১২ বছর ধরেই অদ্ভুত আর ভয়াবহ এক সাপের খেলা দেখিয়ে আসছেন। সম্প্রতি এক বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের জন্য নিজের সেই খেলাটি আবার দেখালেন। তিনি একটি জ্যান্ত বিষধর সাপ নিজের নাক দিয়ে ঢুকিয়ে দিলেন। খানিক পর মুখ দিয়ে বের করলেন দু ফুটের ওপর লম্বা সে সাপটিকে। ওই খেলা দেখতে দেখতে আতঙ্কে দর্শকদের গয়ের লোম দাঁড়িয়ে যায়। তারা ভাবে-‘হায় আল্লা, এরপর কি? সাপটি সত্যিই বের হবে তো, যদি না বের হয়! মানুষটাকে যদি কামড়ে দেয়।’ এই হল ইকবালের খেলার আসল সাসপেন্স।
ইকবালের বাড়ি পাকিস্তানের বন্দর নগরী করাচি সংলগ্ন এক গ্রামে। পাঁচ মেয়ে আর তিন ছেলে নিয়ে বিরাট সংসার। আয় বলতে সেই সাপের খেলা আর কৌশল যা ১২ বছর ধরে করে আসছেন। ঝুঁকিপূর্ণ এই খেলায় তার আয় মাত্র ৫ পাউন্ড। বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫৯২ টাকা। একজন মানুষের জীবনের দাম মাত্র ৫ পাউন্ড! অবাক হচ্ছেন? তাহলে ইকবাল কি বলে শুনুন। এ সম্পর্কে তার বক্তব্য,‘সাপুড়ে হিসেবে আমাকে আমার সম্প্রদায়ের লোকজন সম্মান করে। আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়েই এটি দেখাই। চাইলেই যে কোনো সাপুড়ের পক্ষে এটি করা সম্ভব নয়। গুরুজনের আশীর্বাদ আছে বলেই আমি এ ধরনের খেলা দেখাতে পারি।’
নিজের এই প্রতিভা নিয়ে এক ধরনের গর্ব বোধ করেন ইকবাল। তাই তো নিজের জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে প্রতিনিয়ত এই খেলা দেখান। আতঙ্কিত দর্শকরা যখন অধীর আগ্রহ নিয়ে সাপটি বেরিয়ে আসার প্রতীক্ষায় থাকে, তখন অদ্ভূত এক ভালোলাগায় আপ্লুত হন সাপুড়ে ইকবাল। উপভোগ করেন তার দর্শকদের চূড়ান্ত সাসপেন্স।
তবে সবসময় যে তিনি সফল হন তা বলা যায় না। একবার তো মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন। কয়েক বছর আগের কথা। তিনি করাচির এক কলেজে খেলা দেখাচ্ছেন। এসময় বিষধর সাপটি তার মুখে কামড় দেয়। ফলে তিন দিন সংজ্ঞাহীন ছিলেন ইকবাল। ভাগ্যগুণে বেঁচে গেছেন। কিন্তু হার মানার মানুষ নন সাপুড়ে ইকবাল। এখনো তিনি ভয়াবহ ওই খেলাটি দেখিয়ে চলেছেন। এ সম্পর্কে স্পষ্ট স্বীকারোক্তি,‘জানি, এটি আমার জীবন কেড়ে নিতে পারে। কিন্তু কি করব বলুন, আমি যে যে আর কোনো কাজ জানিনা। পেট চালানো জন্য এ কাজই করতে হচ্ছে আমাকে।’
তবে এই খেলা দেখানোর আগে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থণা করেনে ইকবাল। সাপটি যেন তাকে না কামড়ায়। পরের দিন নতুন খেলা দেখানোর আগ পর্যন্ত যাতে তিনি বেঁচে থাকতে পারেন।

Tuesday, December 8, 2015

চীনের হাইব্রিড বাড়িই এখন পর্যটকদের কাছে সেরা আকর্ষণ

 চীনে বিশ্বের নানান দেশের অনেক ঐতিহাসিক স্থাপত্যই হুবহু অনুকরণ করে তৈরি করা হয়েছে। মিশরের পিরামিড থেকে অস্ট্রিয়ান আলপাইন কিংবা ইতালির ভেনিস, সব ধরণের অনুকরন স্থাপত্য রয়েছে চিনে। তবে, এবার চিনে তৈরি হয়েছে এক অবাক করা বাড়ি। দুটো বাড়ি অর্ধেক-অর্ধেক করে মিলিয়ে তৈরি হয়েছে এই বাড়িটি।
বাড়িটির নাম ওয়াশিংটন হাইব্রিড। এটি রয়েছে চিনের উত্তরে শি জিয়াঝুয়াং প্রদেশে। এই বাড়িটির একটি অংশ তৈরি হয়েছে চিনের বিখ্যাত টেম্পল অফ হেভেনের আদলে। আর অন্য অংশটি তৈরি হয়েছে ওয়াশিংটন স্টেট ক্যাপিটল বা কংগ্রেস ভবনের আদলে। ভবনটি বাইরে থেকে দেখলে মনে হবে, দুই বাড়ির দুটি টুকরো এনে একসঙ্গে জোড়া দেওয়া হয়েছে।এই বাড়িটি মোট ৪ তলা উচুঁ, আর বাড়িটিই এখন চিনের পর্যটকদের মূল আকর্ষণ হয়ে উঠেছে।এক-একজন একেক রকমের ব্যাখ্যা করছে বাড়িটিকে নিয়ে। কেউ বলছেন, এটা আমেরিকা আর চিনের বন্ধুত্বের প্রতীক। কেউ বা বলছেন, এটা দুই ইঞ্জিনিয়ারের ঝগড়ার প্রতীক। আসলে যাই হোক, আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এখন এই বাড়িটাই।

Monday, December 7, 2015

অজ্ঞতায় বিশ্বে প্রথম মেক্সিকো, দ্বিতীয় ভারত

অজ্ঞতার বিচারে বিশ্বে দুই নম্বর স্থান অর্জন করল ভারত। সম্প্রতি এক ব্রিটিশ সমীক্ষায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর এ তথ্য। সমীক্ষার তথ্যানুযায়ী মেক্সিকোর পর ভারতই বিশ্বের দ্বিতীয় অজ্ঞতম রাষ্ট্র।বিশ্বের ৩৩টি দেশের মোট ২৫,০০০ নাগরিকের উপর সমীক্ষা চালায় লন্ডনের মার্কেট রিসার্চ সংস্থা ইপসস মোরি। অসাম্য, ধর্মহীন জনসংখ্যা, নারীর কর্মসংস্থান ও ইন্টারনেট লভ্যতা- গবেষণায় মোট এই ৪টি বিষয়ের উপর প্রশ্ন রাখা হয়েছিল। দেখা গেছে, বিশ্বের বেশির ভাগ মানুষ উদ্বেগজনক বিষয় নিয়ে বেশি চিন্তা করে থাকেন অথচ অন্যান্য বিষয় নিয়ে কম মাথা ঘামান।সমীক্ষা জানাচ্ছে, 'মেক্সিকো ও ভারত বিশ্বের অজ্ঞতম দেশের তালিকায় প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে, কারণ প্রধান চারটি বিষয় সম্পর্কে এই দুই দেশের মানুষের ধারণা সবচেয়ে কম। অন্য দিকে, বিচক্ষণতম রাষ্ট্র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া এবং তার পরই রয়েছে আয়ারল্যান্ড। এই দুই দেশের নাগরিকদের ওই চার বিষয়ে ধারণা স্পষ্ট ও সঠিক।'
জানা গেছে, রাষ্ট্রের অজ্ঞতা মাপার জন্য সাহায্য নেওয়া হয়েছে 'অজ্ঞতার সূচকের'। সমাজের সবচেয়ে বিত্তবানদের সম্পত্তির খোঁজখবর, মেদবহুলতা, ধর্মের সঙ্গে জনজাতির সম্পর্কহীনতা, অভিবাসন, বাবা-মায়ের সঙ্গে বসবাস, নারীর কর্মসংস্থান, গ্রাম্য জীবনযাপন এবং ইন্টারনেট ব্যবহার- এমনই কয়েকটি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে এই সূচক তৈরি করা হয়।সমীক্ষায় দেখা গেছে, বিষয়গুলি নিয়ে বেশিরভাগ ভারতবাসীরই ধারণা অস্পষ্ট। যেমন, সমাজের বিত্তবানদের হাতে কী পরিমাণ রাষ্ট্রীয় ধন জমা আছে সেই সম্পর্কে অধিকাংশ ভারতবাসীর কোনও ধারণা নেই। সমীক্ষা অনুসারে, ভারতের মোট ধনসম্পদের ৭০ শতাংশ বিত্তবানদের কুক্ষিগত থাকলেও ভারতের জনসাধারণ তা জানেনই না। তেমনই, দেশে ধর্মহীন নাগরিক তাঁদের মতে মোট জনসংখ্যার ৩৩ শতাংশ দখল করলেও আসলে তা মাত্র ১ শতাংশ।
সমীক্ষার রিপোর্ট জানাচ্ছে, নারীর কর্সসংস্থান সম্পর্কে সবচেয়ে অজ্ঞানতায় ভুগছে ইসরায়েল। আম ইসরায়েলবাসীর ধারণা সে দেশের ২৯ শতাংশ নারী রোজগার করেন। তবে বাস্তব সংখ্যা এর অনেক বেশি। আবার ভারত, মেক্সিকো, দক্ষিণ আফ্রিকা ও চিলির মানুষ বাস্তবের চেয়ে নারী কর্মসংস্থানের হার ঢের বেশি বলে মনে করেন। পাশাপাশি, দেশের রাজনৈতিক পটচিত্রে নারীর অংশগ্রহণের হার অনেক বেশি বলে ধারণা ভারতীয়দের। একই ধারণার বশবর্তী কলাম্বিয়া, রাশিয়া ও ব্রাজিল। বাস্তব চিত্রটি কিন্তু একেবারেই ভিন্ন।তবে একটি বিষয় সমীক্ষায় স্পষ্ট এবং তা হল, দেশের গ্রামীণ মানুষ সম্পর্কে বেশির ভাগ ভারতীয়র অত্যন্ত নীচু ধারণা রয়েছে। শুধু তাই নয়, অধিকাংশ ভারতবাসীর চোখে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী মানুষের সংখ্যা বাস্তবের চেয়ে অনেক বেশি। অনলাইন ইন্টারনেট ইউজারের সংখ্যা যেখানে ৪১%, জনসাধারণের ধারণায় সেই সংখ্যা অন্তত ৬০%।

এয়ার ফ্রেসনার খেয়ে নেশা করেন নারী!

নেশা, না রোগ! এক নারী জলের বদলে স্প্রে খেয়ে থাকেন। আর ওই স্প্রে ঘর ফ্রেস রাখার এয়ার ফ্রেসনার। সংবাদমাধ্যম টুডে বলছে, দুই সন্তানের জননী ২৭ বছরের ইভলিন জানিয়েছেন, স্প্রে খেতে না পেলে তার বেঁচে থাকাটা দুঃসহ হয়ে যাবে। যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা ইভলিন সপ্তাহে ২০ ক্যান ফ্রেসনার স্প্রে খেয়ে ফেলেন।বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ঘরকে সুগন্ধে ভরপুর করতে যে স্প্রে ব্যবহার করা হয়, তাতে অনেক বিষাক্ত রাসায়নিক থাকে। যা খেলে অবধারিত ক্ষতির সম্ভাবনা।কিন্তু ইভলিনের নেশা এমনই মারাত্মক যে তিনি দিনে অনন্ত তিনবার স্প্রে খেয়ে থাকেন। কখনও কখনও সরাসরি মুখেই স্প্রে করে খেয়ে নেন। আবার কখনও কাপে বরফ ঢেলে স্প্রে করে খেয়ে নেন। চিকিত্সকরা বহুবারই সতর্ক করে জানিয়েছেন যে, তার এই অভ্যেস প্রাণঘাতী হতে পারে। কিন্তু ওই সতর্কবাণীকে উপেক্ষা করেই নেশায় মশগুল ইভলিন।মাই স্ট্রেঞ্জ অ্যাডিকশন নামে এক টেলিভিশন শো-তে ইভলিন তার এই নেশার কথা জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, একবার ভুল করে এয়ার ফ্রেসনার তিনি চেখে ফেলেন। ব্যস, তারপরই নেশায় জড়িয়ে পড়েন। মা মারা যাওয়ার পর নেশা তাকে পেয়ে বসে। ইভলিন গৃহবধূ নন। তিনি একটি আসবাবপত্র বিক্রয় কেন্দ্রের সেলস ম্যানেজার। তিনি তার পার্সে সবসময়ই স্প্রে রাখেন।

Wednesday, December 2, 2015

যুদ্ধের চিঠি, ডেলিভারি হলো ৭০ বছর পর!

সত্তর বছরেরও বেশি সময় পর যুদ্ধের সময় লেখা ৯টি চিঠি পাঠানো হলো প্রাপকের ঠিকানায়। লন্ডনে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এ চিঠিগুলো লেখা হয়েছিল। কিন্তু এতদিন তা প্রাপকের কাছে পাঠানো হয়নি।চিঠিগুলো লেখেছিলেন লরেন্স প্রাইস এবং তার ভাই। ফেডারেশন জংশনে বসে এগুলো দুই সৈন্য লিখেছিলেন মা ও নানীর কাছে। কিন্তু তারা প্রত্যন্ত অঞ্চলে থাকতেন বলে কখনো তাদের কাছে পৌঁছেনি। কয়েক বছর আগে বোস্টনের এক নিলাম হাউজে বিক্রি হয় এগুলো।মিউরিয়েল ম্যাকেঞ্জি নামে এক নারীর কাছে সংরক্ষিত ছিল চিঠিগুলো। এগুলো প্রেরকের কাছে পাঠাতেও চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাদের খুঁজে পাওয়ার আগেই তার মৃত্যু ঘটে। তবে মারা যাওয়ার আগে মিউরিয়েল তার বোন ফার্ন জর্ডানকে বলে যান প্রাপকের খোঁজ চালিয়ে যাওয়ার কথা। তাও আট বছর আগের ঘটনা।
জর্ডান জানান, চিঠিগুলো নিয়ে আমি প্রাপকেরর খোঁজ চালিয়ে যেতে থাকি। কিন্তু এ সব চিঠির প্রেরক আদৌ বেঁচে আছেন কিনা তা আমি জানি না। চিঠিগুলো পড়েছি। এগুলো এডওয়ার্ড ডি. প্রাইসের ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে। এগুলো মা এবং নানীর কাছে লেখা হয়েছিল।
চিঠিগুলোতে যুদ্ধ বিষয়ে তেমন তথ্য দেওয়া নেই। সম্ভবত এ সম্পর্কে লেখার অনুমতি ছিল না। বরং বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হওয়া ইত্যাদি বিষয়ে লেখা ছিল, বলেন জর্ডান। জর্ডান আরো জানান, ফিনফিনে পাতলা কাগজে লেখা হয়েছে। দারুণ ছিল চিঠির ভাষা। মায়ের কাছে লেখা চিঠি অনেক অর্থপূর্ণ ছিল।জর্ডান শেষ পর্যন্ত চিঠির মালিক খুঁজে বের করতে নাতনী  নাতাশা ক্রেইগের সহায়তা নিয়েছেন। একটি হাতে লেখা নোটে তিনি প্রাপককে খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়ে যান নাতাশাকে।অবশেষে সমস্যার সমাধান দেয় ফেসবুক। নাতাশা প্রাপকের খোঁজ করেন অনলাইনে এবং ফেসবুকে, জানান নাতাশা। ফেসবুকে এ সংক্রান্ত পোস্ট দিলে দারুণ সাড়া পড়ে যায়। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে কয়েক হাজার শেয়ার হয়। অনেচা মানুষও এগুলো শেয়ার করেছেন। ফেসবুকের মাধ্যমে যাদের নজরে পড়ে পোস্টটি, তাদেরই একজন শেন কেলি। তিনিই সেই প্রাইসের ছেলের সন্ধান দেন।পরে কেলি জানান, স্রেফ অনলাইনে সার্চ দিয়েছি এবং সহজেই বের করতে পারি। পরে কেলি এবং ক্রেইগ অবশেষে জন এবং চার্লি প্রাইসের দেখা পান। এরা সেই প্রাইসের ছেলে। আজ থেকে ৭০ বছর আগে লেখা চিঠিগুলো এতদিন পর পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা সম্ভব হলো।প্রাপকের বংশধর চার্লি প্রাইস জানান, এগুলো হাতে পাওয়া পরম সৌভাগ্যের বিষয়। ভিন্ন সময় এবং পরিস্থিতি থেকে আসা চিঠি এগুলো। আমার বাবার চিঠি। কিন্তু চিঠিগুলো বোস্টন নিলামে কিভাবে গেলো, সে সম্পর্কে চার্লির কোনো ধারণাই নেই।

১১ বছরের মেয়ে জন্ম দিল নিজের মায়ের সন্তান

হালের হিন্দি কিংবা বাংলা, প্রায় সব ভাষারই নতুন ছবিতে এই ধরনের একটা দৃশ্য দেখানো ট্রেন্ড হয়ে গিয়েছে। যেখানে অনভিজ্ঞ তরুণ নায়ক দিব্যি নিজের হাতের কাছে থাকা যন্ত্রপাতি দিয়ে বাচ্চা প্রসব করিয়ে দিচ্ছেন। সে রাজকুমার হিরানির থ্রি ইডিয়টসই হোক অথবা রাজ চক্রবর্তীর দুই পৃথিবী। গল্প একই।এবার ওরকম গল্প নয়। একেবারে বাস্তবেই এমন কাণ্ড করে দেখালো এক ১১ বছরের মেয়ে! যে কিনা কোনওদিন স্কুলেই যায়নি! সেই জন্ম দিল শিশুর! তাও সেই শিশুটি কিনা তারই বোন! অর্থাত্‍ মায়ের সন্তানের জন্ম দিল সে!ইংল্যান্ডের বার্মিংহ্যামের ১১ বছরের মেয়ের নাম কেইটলিন। তারা ৫ ভাই-বোন। এবং সেই সবথেকে বড়। তার মায়ের নাম টারা নাইটলে। কেইটলিন নিজে হাতে তার বোনের জন্ম দেওয়ার পর দিব্যি তার মাকে দেখায় এবং বলে, 'মা তোমার মেয়ে আর আমার বোন হয়েছে।'
এমন একটা দুর্দান্ত ঘটনার সাক্ষী থাকতে পেরে এবং নিজে হাতে এই ঘটনা ঘটিয়ে উত্তেজিত কেইটলিন বলেছেন, 'মায়ের যখন প্রসববেদনা উঠেছিল, তখন ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আসলে এমন অভিজ্ঞতা তো কখনও ছিল না, তাই। কিন্তু বোন মানে, এলসা মনেটের জন্মের পর খুব খুশি হয়েছিলাম।'কিন্তু কেইটলিনকে এমনটা করতেই বা হল কেন? কারণ, তার মায়ের প্রসব বেদনা ওঠার পর, তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ারও সময় পাওয়া যায়নি। সেই সময়, তাকে ওপাশ থেকে ফোনে নির্দেশ দিতে থাকেন ডাক্তাররা। আর সেই অনুযায়ী নির্দেশ পালন করে নিজের মায়ের সন্তানের জন্ম দিয়ে দিল ১১ বছরের একটি মেয়ে! সত্যি, এ যে রাজকুমার হিরানি কিংবা রাজ চক্রবর্তীদের ছবিকেও বলে বলে হার মানায়।

Tuesday, December 1, 2015

‘সমকামিতার অপরাধে’ সৌদি আরবে ঘোড়ার মৃত্যুদণ্ড!

সৌদি আরবে ‘সমকামিতার অপরাধে’ একটি ঘোড়াকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার আরব বিশ্বের জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ এই খবর জানায়। দৌড়ের জন্য বিখ্যাত এই ঘোড়াটির বাজারমূল্য ছিল প্রায় ৯৩ কোটি টাকা (১২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)।আদালতের সূত্রে পত্রিকাটি জানায়, চার বছর বয়সী এই ঘোড়াটির নাম আল-হাদিয়ে। আরবি এই নামটির অর্থ ‘উপহার’। এর মালিক ছিলেন সৌদি যুবরাজ আলওয়ালাদ-বিন-তালাল। দৌড়ের জন্য বিখ্যাত এই ঘোড়াটি চলতি ঘোড়দৌড়ের বছরেই প্রায় ৪২ কোটি টাকা (ছয় মিলিয়ন ডলার) আয় করেছিল। এটি সৌদি আরবের জাতীয় ঘৌড়দৌড় প্রতিযোগিতা ও কাতারের ‘অ্যারাবিয়ান হর্স শো’-তেও অংশ নিয়েছিল।
গত সপ্তাহে পুরুষ এই ঘোড়াটিকে আরেকটি ঘোড়ার সঙ্গে সঙ্গম করতে দেখে পরিচর্যাকারী। এরপরই সে বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানায়। এর পর থেকে ঘোড়াটিকে আলাদা করে রাখা হয়। এবং সমকামিতা আইনে ঘোড়াটির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।গত শুক্রবার ঘোড়াটির মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর একই দিন তা কার্যকর করা হয়। আরব বিশ্বের আরেক সংবাদমাধ্যম আরব ওয়ার্ল্ড ডটকম রায় স্বাক্ষরের একটি ছবি প্রকাশ করে বলেছে, দেশটির সরকারি টেলিভিশনে ঘোড়াটির মৃত্যুদণ্ডের আদেশের বিষয়টি প্রচার করা হয়। যাতে জনগণ বুঝতে পারে সমকামিতার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রযন্ত্র কতটা কড়া। এমনকি কোনো প্রাণীকেও এই অপরাধে ছাড় দেওয়া হয় না!
সৌদি আরবের ধর্মীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষ ও ‘সদগুণের বিস্তার এবং অনৈতিকতা প্রতিরোধ কমিটির’ প্রধান শাইখ আবদুর রহমান আল আলসানাদ বলেন, ‘সমকামিতা একটি মারাত্মক রোগ, যার সম্পর্কে বিজ্ঞান খুবই কম জানে। আমাদের পবিত্র এই ভূমিকে সম্ভাব্য সকল উপায়ে এই ক্ষতিরোগ থেকে দূরে রাখা হবে। শুধু মানুষ নয়, সকল প্রাণীকেও এই ক্ষতিকর অভ্যাস থেকে মুক্ত রাখতে সব ধরনের কঠোরতার অনুমতি আইনে দেওয়া আছে।’আবদুর রহমান আল আলসানাদ আরো বলেন, ‘আমাদের বিদেশি বন্ধুরা হয়তো প্রাণী অধিকার নিয়ে কথা বলবেন। কিন্তু প্রাণী অধিকারের নামেও আমরা সমকামী প্রাণীকে এই পবিত্র ভূমিতে স্থান দিতে পারি না। সৌদি আরবের কোনো শাসক কোনোদিনও এর অনুমতি দেয়নি। আমাদের জনগণও ভয়াবহ এই অসুস্থতার বিষয়ে সচেতন আছেন।’