সত্তর বছরেরও বেশি সময় পর যুদ্ধের সময় লেখা ৯টি চিঠি পাঠানো হলো প্রাপকের ঠিকানায়। লন্ডনে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এ চিঠিগুলো লেখা হয়েছিল। কিন্তু এতদিন তা প্রাপকের কাছে পাঠানো হয়নি।চিঠিগুলো লেখেছিলেন লরেন্স প্রাইস এবং তার ভাই। ফেডারেশন জংশনে বসে এগুলো দুই সৈন্য লিখেছিলেন মা ও নানীর কাছে। কিন্তু তারা প্রত্যন্ত অঞ্চলে থাকতেন বলে কখনো তাদের কাছে পৌঁছেনি। কয়েক বছর আগে বোস্টনের এক নিলাম হাউজে বিক্রি হয় এগুলো।মিউরিয়েল ম্যাকেঞ্জি নামে এক নারীর কাছে সংরক্ষিত ছিল চিঠিগুলো। এগুলো প্রেরকের কাছে পাঠাতেও চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাদের খুঁজে পাওয়ার আগেই তার মৃত্যু ঘটে। তবে মারা যাওয়ার আগে মিউরিয়েল তার বোন ফার্ন জর্ডানকে বলে যান প্রাপকের খোঁজ চালিয়ে যাওয়ার কথা। তাও আট বছর আগের ঘটনা।
জর্ডান জানান, চিঠিগুলো নিয়ে আমি প্রাপকেরর খোঁজ চালিয়ে যেতে থাকি। কিন্তু এ সব চিঠির প্রেরক আদৌ বেঁচে আছেন কিনা তা আমি জানি না। চিঠিগুলো পড়েছি। এগুলো এডওয়ার্ড ডি. প্রাইসের ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে। এগুলো মা এবং নানীর কাছে লেখা হয়েছিল।
চিঠিগুলোতে যুদ্ধ বিষয়ে তেমন তথ্য দেওয়া নেই। সম্ভবত এ সম্পর্কে লেখার অনুমতি ছিল না। বরং বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হওয়া ইত্যাদি বিষয়ে লেখা ছিল, বলেন জর্ডান। জর্ডান আরো জানান, ফিনফিনে পাতলা কাগজে লেখা হয়েছে। দারুণ ছিল চিঠির ভাষা। মায়ের কাছে লেখা চিঠি অনেক অর্থপূর্ণ ছিল।জর্ডান শেষ পর্যন্ত চিঠির মালিক খুঁজে বের করতে নাতনী নাতাশা ক্রেইগের সহায়তা নিয়েছেন। একটি হাতে লেখা নোটে তিনি প্রাপককে খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়ে যান নাতাশাকে।অবশেষে সমস্যার সমাধান দেয় ফেসবুক। নাতাশা প্রাপকের খোঁজ করেন অনলাইনে এবং ফেসবুকে, জানান নাতাশা। ফেসবুকে এ সংক্রান্ত পোস্ট দিলে দারুণ সাড়া পড়ে যায়। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে কয়েক হাজার শেয়ার হয়। অনেচা মানুষও এগুলো শেয়ার করেছেন। ফেসবুকের মাধ্যমে যাদের নজরে পড়ে পোস্টটি, তাদেরই একজন শেন কেলি। তিনিই সেই প্রাইসের ছেলের সন্ধান দেন।পরে কেলি জানান, স্রেফ অনলাইনে সার্চ দিয়েছি এবং সহজেই বের করতে পারি। পরে কেলি এবং ক্রেইগ অবশেষে জন এবং চার্লি প্রাইসের দেখা পান। এরা সেই প্রাইসের ছেলে। আজ থেকে ৭০ বছর আগে লেখা চিঠিগুলো এতদিন পর পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা সম্ভব হলো।প্রাপকের বংশধর চার্লি প্রাইস জানান, এগুলো হাতে পাওয়া পরম সৌভাগ্যের বিষয়। ভিন্ন সময় এবং পরিস্থিতি থেকে আসা চিঠি এগুলো। আমার বাবার চিঠি। কিন্তু চিঠিগুলো বোস্টন নিলামে কিভাবে গেলো, সে সম্পর্কে চার্লির কোনো ধারণাই নেই।
No comments:
Post a Comment