আজব পৃথিবী

Monday, December 25, 2017

সবচেয়ে বড় উভচর বিমান

বিশ্বের সবচেয়ে বড় উভচর বিমানের সফল উড্ডয়ন ঘটাল চীন। মিলিটারিতে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে নির্মিত এজি৬০০ মডেলের বিমানটি প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন শেষে সফলভাবেই অবতরণ করে।চীনের দক্ষিণাংশের গুয়াংডং প্রদেশের ঝুহাই বিমানবন্দর থেকে রোববার চারটি টার্বোপ্রপ ইঞ্জিনের বিমানটির সফল পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন ঘটানো হয়েছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানা গেছে। এই বিমানটির পোশাকি নাম কুনলং।৫০ জন আরোহী নিয়ে প্রায় ১২ ঘণ্টা আকাশে ভেসে থাকতে পারে এ বিমানটি।

পূর্বে বিভিন্ন সমরাস্ত্র বহন ও মিলিটারি কাজে ব্যবহার হলেও আধুনিকভাবে নির্মিত এ বিমানটি চীনের দক্ষিণ সাগর পাহারায় নিয়োজিত করা হতে পারে বলে দেশটির সংবাদ মাধ্যম শিনহুয়ার এক প্রতিবেদনে জানা গেছে। একে আপাতত সমুদ্র, দ্বীপ ও ডুবো পাহাড়ের রক্ষাকর্তা হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে।বিমানটির ডানার দৈর্ঘ্য প্রায় ১২৭ ফুট ও ওজন ৫৩ দশমিক ৫ টন। এটি তৈরিতে ৮ বছর সময় লেগেছে। তৈরির পরপরই প্রায় ১৭টি বিমান বিক্রির প্রস্তাব পেয়েছে নির্মাণকারী সংস্থা।

১৯৪৭ সালে প্রথম নির্মিত উভচর বিমানটি উড্ডয়নে আলোর মুখ দেখেনি। মাত্র ২৬ সেকেন্ড ওড়ার পরপরই বিধ্বস্ত হয়। বিধ্বস্তাংশগুলো জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।চীনের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি প্রথম উভচর এই বিমানের প্রধান ডিজাইনার হুয়াং লিংকাই বলেন, ‘এ ধরনের বিমান তৈরির ক্ষেত্রে চীনের একটি বড় সফলতা। কেননা বিশ্বের হাতে গোনা মাত্র কয়েকটি দেশের এ ধরনের বিশাল আকারের উভচর বিমান তৈরির সক্ষমতা রয়েছে।’

বিমানটির প্রস্তুতকারক রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেশন অব চায়না (এভিআইসি) জানায়, বিমানটির কাঠামো ৩৯ দশমিক ৬ মিটার এবং এটির পাখার দৈর্ঘ্য ৩৮ দশমিক ৮ মিটার।এভিআইসি সূত্র জানায়, বিমানটির সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা ৫৩ দশমিক ৫ টন। এটি প্রতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৫শ’ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারে। বিমানটি একটানা ১২ ঘণ্টা উড়তে সক্ষম। এটি বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় উভচর বিমান বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Tuesday, November 28, 2017

আইলিড শেভ

চুল কাটার বহু রকম ফেরে নিত্যদিনই গ্রাহকদের বায়নায় কেতা কায়দা শিখতে হচ্ছে স্থানীয় নাপিতদের। তবে এবার নিছক কেতা কায়দার জন্য নয়, দোকানে আসা গ্রাহকদের আরাম দিতে, তাদের চোখের পাতা শেভ করছেন চিনের এক নাপিত জিওং গাউ। চিনের পুরনো এক সাবেকি পন্থা মেনে চলছে এই চাঁছার কাজ।চিনের সিচুয়ানের নাপিত জিওং আবিষ্কার করেছেন নতুন ফ্যাশন স্টেটমেন্ট তথা আরামের উপায় 'ব্লেড ওয়াশ আই'। যে ফ্যাশন স্টেটমেন্টের মাধ্যমে এই নাপিত চোখের পাতার ধার ঘেঁসে আলতো করে চেঁছে দিচ্ছেন লোমগুলি। এই কাজ চলছে ক্ষুর দিয়ে। ক্ষুর চালিয়ে মাথার চুল কাটা দেখেছেন, কিন্তু এই পন্থা অত্যাধুনিক। আর 'আই লিড শেভ' করতে রোজ ভিড় হচ্ছে বহু ফ্যাশনপ্রেমী মানুষের। 

তবে শুধু ফ্যাশন নয়, এই আইলিড শেভ করে প্রচুর মানুষ আরাম পাচ্ছেন বলে দাবি এই নাপিতের। চিকিৎসকদের মতে যদি পাতা চাঁছবার যন্ত্রপাতি পরিচ্ছন্ন হয়, তাহলে কোনওভাবেই কোনও রকমের সংক্রমণ ছড়াবেনা এই আইলিড শেভ থেকে। এদিকে, যাঁরা এভাবে চোখের পাতা চাঁছছেন তারাও বেশ খুশি এই কাজ করে। সব মিলিয়ে এই গোটা ঘটনায় হৈচৈ পড়ে গিয়েছে চিনে।

Tuesday, September 5, 2017

কেমন হাত

ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য উত্তরপ্রদেশের বালক তারিক। বয়স ১২ বছর। জন্মের সময় থেকেই তার দুহাতে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। স্বাভাবিকের চেয়ে তা ১২ ইঞ্চি বেশি লম্বা। হাতের আঙ্গুলও অস্বাভাবিক লম্বা ও মোটা।তার এ হাত দেখলে অন্য বাচ্চারা ভয় পায় বলে তাকে স্কুলে ভর্তি করানো যায় নি। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে ভর্তি করাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তারিকের বন্ধুবান্ধব ছিল। কিন্তু তারা যখন দেখেছে, তার এ অসুখ ভালো হওয়ার নয়, তখন তারা তাকে ছেড়ে চলে গেছে।তাকে স্থানীয়রা ‘ডেভিল’ বা অশরীরি বা দুষ্টচক্রের মানুষ বলে আখ্যায়িত করে। তাকে মনে করা হয় অভিশপ্ত হিসেবে। কিন্তু তারিক জানে তার এ রোগ সারার মতো। তবে চিকিৎসা করানোর মতো সামর্থ নেই পরিবারের। তার পিতা মারা গেছেন। এরপর থেকে তারিককে নির্ভর করতে হয় তার ভাইয়ের ওপর।

সে নিজে কাপড় পরতে পারে না। খেতে পারে না। গোসল করতে পারে না। সবই করে দেয় তার ভাই। তার এ রোগ কি ধরনের তা পরীক্ষাও করা হয় নি। তবে কিছু ডাক্তার আন্দাজ করছেন তারিক ‘এলিফ্যান্ট ফুট’ নামের একটি রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারে। তারিক বলে, ‘এ অবস্থা থেকে আমি মুক্তি পেতে চাই। অন্য ছেলেমেয়ের মতো আমিও হতে চাই। প্রতিদিন স্কুলে যেতে চাই। খেলতে চাই। আমি স্বপ্ন দেখি, একদিন আমার স্বাভাবিক হাত হবে। এক সময় আমার বন্ধু ছিল। এখন কেউ নেই। সবাই আমাকে দেখে ভয় পায়। মানুষ মনে করে কোনো অভিশাপের ফল আমার এই অবস্থা।’তারিকের ভাই হরজ্ঞানের ভাষায়, ‘ওকে কোনো স্কুলই ভর্তি করাতে রাজি হয় নি। তারা বলেছে, ওর এত বড় হাত দেখে অন্য ছাত্রছাত্রীরা ভয় পাবে। আসলে তারিকের হাত অনেক বড়। আমার জীবনে আমি এত বড় হাত দেখিনি কখনো। এ হাত নিয়ে তারিকের জীবন স্থবির হয়ে আছে।’

বিশ্বের সব থেকে বড় লাইব্রেরি

মোট এক লাখ ১০ হাজার বর্গমিটারের বিশাল জায়গা নিয়ে ইরানের রাজধানী তেহরানে নির্মিত হয়েছে তেহরান বুক গার্ডেন।এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় লাইব্রেরি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।তেহরানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আব্বাসাবাদ হিলস-এ নির্মিত এই লাইব্রেরিটিতে বইয়ের দৃষ্টি আকর্ষক প্রদর্শনীর সঙ্গে রয়েছে একটি আর্ট গ্যালারি এবং ১০টির মতো থিয়েটার ও অ্যাম্ফিথিয়েটার।এখানে শিশুদের জন্য নির্ধারিত রয়েছে একটি বিশেষ সেকশন। যেখানে থাকবে তাদের পাঠোপযোগী বই। নিউজ উইকের এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, শুধু শিশুদের জন্যই রয়েছে চার লাখ বইয়ের বিশাল সংগ্রহ।

এই লাইব্রেরিতে রয়েছে মুভি থিয়েটার, সায়েন্স হল, ক্লাসরুম, একটি রেস্টুরেন্ট এবং একটি প্রার্থনাঘর। আর মনোরম পরিবেশে পড়ার জন্য লাইব্রেরির ছাদে রয়েছে সবুজ পার্ক।চলতি বছরের জুলাইয়ে উদ্বোধনের সময় তেহরানের মেয়র মোহাম্মদ বাকার ক্বালীবাফ বলেছিলেন, এটি আমাদের দেশের জন্য একটি বড় সাংস্কৃতিক আয়োজন। এই সাংস্কৃতিক ও শিক্ষামূলক সুযোগ গ্রহণ করে শিশুরা যথাযথ ভাবে বেড়ে উঠবে।তেহরান বুক গার্ডেন প্রতিষ্ঠার প্রথম প্রস্তাব এসেছিল ২০০৪ সালে। তেহরান আন্তর্জাতিক বইমেলার আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তার কারণে এই প্রস্তাবটি এসেছিল। বিভিন্ন বই বাজেয়াপ্ত ও নিষিদ্ধ করা নিয়ে ইরানকে আগে সমালোনার শিকার হতে হয়েছে। সম্প্রতি ইরানের  দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আসছে বলে মনে করা হচ্ছে।

গত ২০১৫ সালের তেহরান আন্তর্জাতিক বইমেলাতে শীর্ষ প্রকাশকদের সঙ্গে কথা বলেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনী। এর মাধ্যমে এই ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়েছিল যে ইসলামিক রিপাবলিকে প্রকাশনার যে বিধি-বিধান রয়েছে তা  শিথিল হচ্ছে। দ্য ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে হাসান রুহানীর সরকারের ব্যাপক প্রশংসা করা হয়েছে।গিনেজ বিশ্ব রেকর্ড অনুযায়ী, ১৯৯৯ সালের পর থেকে বিশ্বের সব থেকে বড় লাইব্রেরি হচ্ছে নিউইয়র্ক শহরের ফিফথ এভিনিউয়ের বার্নেস এন্ড নোবেল। এটি প্রায় এক লাখ ৫৪ হাজার স্কয়ার ফিট জায়গা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত। যেখানে ১২ মাইল দীর্ঘ জায়গা জুড়ে বই রাখার জন্য ব্যবহৃত সেলফ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই লাইব্রেরি থেকে তেহরান বুক গার্ডেন প্রায় তিনগুন বড়।

Wednesday, June 21, 2017

রাজার জন্য স্ত্রী বাছতে প্রকাশ্যে কুমারিত্ব পরীক্ষা

প্রতি বছর রাজা একজন করে নতুন রানি বেছে নেন । বছরের নির্দিষ্ট সময়ে । তার জন্য প্রকাশ্যে পরীক্ষা করা হয় নাবালিকাদের কুমারিত্ব । পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্যে থেকে একজনকে রানি হিসেবে মনোনীত করেন রাজা ।আরব্য রজনীর গল্প নয় । এটা বাস্তব ঘটনা আফ্রিকার সোয়াজিল্যান্ডে । আফ্রিকার দক্ষিণ অংশে এই ছোট্ট দেশটা সোয়াজি উপজাতি অধ্যুষিত । দেশের সিংহাসনে আসীন রাজা তৃতীয় সোয়াতি । প্রচলিত রীতি হল‚ বছরের নির্দিষ্ট সময়ে রাজা নতুন রানি বেছে নেবেন ।সেই উপলক্ষে রাজার সামনে অবিবাহিতা নাবালিকারা ঊর্ধ্বাঙ্গ অনাবৃত করে প্যারেড করেন । এরপর শুরু হয় উমহ্লাংলা উৎসব । রাজার সামনে নাচ গানে মেতে ওঠে ওই টপলেস-কন্যেরা । তারপর প্রকাশ্যে ওই মেয়েদের কুমারিত্ব বা ভার্জিনিটি পরীক্ষা করা হয় ।আন্তর্জাতিক মহলে এই রীতি নিন্দনীয় হলেও সোয়াজিল্যান্ডে কোনও পরিবর্তনের চিহ্ন চোখে পড়েনি । সোয়াতি তৃতীয়-র বাবা রাজা দ্বিতীয় সোভুজার ছিলেন ১২৫ জন রানি । গত বছর ১৫ জন স্ত্রী‚ ৩০ জন কচিকাঁচা এবং শতাধিক পরিচারক নিয়ে ইন্ডিয়া আফ্রিকা সামিটে এসে ভারতে অতিথি হয়ে ছিলেন রাজা তৃতীয় সোয়াতি‚ নিজে । তিনি বিশ্বের ধনকুবের শাসকদের মধ্যে অন্যতম ।

Sunday, June 18, 2017

প্রবালের ৭টি অজানা তথ্য

১। সমুদ্র সৈকত রক্ষা করে প্রবালপ্রাচীর: উপকূলীয় অঞ্চলে অনেক মানুষের বসবাস। তাদের অধিকাংশই জানেন না, প্রবালপ্রাচীর সমুদ্র সৈকতকে ঘূর্ণিঝড়, ঢেউ, বন্যাসহ বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করে, সেই সঙ্গে রক্ষা করে সৈকতের মানুষগুলোকে এবং তাদের সহায়-সম্পদ। 
২। অধিকাংশ প্রবালই রঙহীন: উজ্জ্বল রং প্রবালপ্রাচীরকে আকর্ষণীয় করে তোলে। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, বেশিরভাগ প্রবালেরই কিন্তু কোনো রং নেই। প্রবালের গায়ে জমে থাকা নানা রঙের নানা প্রজাতির শ্যাওলার কারণেই প্রবালপ্রাচীরের রং এমন উজ্জ্বল দেখায়। 
৩। কিছু প্রবাল তাপ বৃদ্ধির সঙ্গে মানিয়ে নেয়: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সমুদ্রের তাপমাত্রাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি অধিকাংশ প্রবালের অস্তিত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ। কিন্তু এর মধ্যে আশার খবর হল, কিছু প্রবাল সমুদ্রের তাপ বৃদ্ধির সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে টিকে থাকতে পারে। 
৪। সমুদ্রের নার্সারি প্রবালপ্রাচীর: পুরো পৃথিবীর সম্পূর্ণ জলজ পরিবেশের ১% এরও কম অংশ প্রবালপ্রাচীর। কিন্তু এই প্রবালপ্রাচীর ২৫% জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদের বাসস্থান। এক চতুর্থাংশ সামুদ্রিক মাছের জন্য নার্সারির মতো কাজ করে প্রবালপ্রাচীর। 
৫। অর্থনৈতিক গুরুত্ব: ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, ভারত, ভিয়েতনাম এবং চীনের এক মিলিয়নের বেশি মানুষ প্রবালপ্রাচীর বা তার কাছাকাছি এলাকায় মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রবালপ্রাচীর এলাকার মাছ থেকে বছরে ২.৪ বিলিয়ন ডলার আয় হয়। ২০১০ সালে পুরো বিশ্বে পর্যটন খাতে প্রবালপ্রাচীর এলাকা থেকে আয় ছিল ১১.৫ বিলিয়ন ডলার। 
৬। প্রাকৃতিক থ্রিডি প্রিন্টার: বর্তমানে থ্রিডি প্রিন্টার নিয়ে মেতে আছে গোটা দুনিয়া। মজার ব্যাপার হল, প্রবাল কিন্তু প্রাকৃতিক থ্রিডি প্রিন্টার। প্রবালের মধ্যে থাকা পলিপ সমুদ্রের পানি থেকে ক্যালসিয়াম সংগ্রহ করে তা কার্বন ডাই অক্সাইডের সঙ্গে মিশিয়ে চুনাপাথরের কঙ্কাল তৈরি করে যা প্রবালপ্রাচীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। 
৭। প্রবাল মাংসাশী প্রাণী: প্রবাল কিন্তু মাংসাশী প্রাণী। তারা ছোট মাছ, ছোট জলজ প্রাণী, এমনকি ছোট ছোট কাঁকড়াও খেয়ে থাকে।

যে শিশুরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যাতায়াত করে

১। সুমাত্রা, ইন্দোনেশিয়া
ছবিটি দেখে আঁতকে উঠছেন? মনে হচ্ছে, শিশুটি এখনি পানিতে পড়ে যাবে? ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা এলাকার শিশুরা প্রতিদিন এই রাস্তা ধরে স্কুলে যাতায়াত করে। নদীর ৩০ ফিট উপর স্টিলের তার ধরে বনের ভিতর দিয়ে সাত মাইল রাস্তা পাড় করে স্কুলে যেতে হয় সুমাত্রার শিশুদের। দুর্যোগের সময় দুর্ঘটনা এমনকি মৃত্যুর মতো ঘটনা এখানে ঘটে থাকে।
২। পিলি, চীন
চীনের পিলি গ্রামের প্রায় ৮০ জন শিশু জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ের ভিতর দিয়ে ১২৫ মাইল দূরে অবস্থিত স্কুলে যাতায়াত করে। শিশুদেরকে দেখাশোনা করার জন্য সহচর বা প্রহরী থাকে। 
৩। সিলাংকাপ, ইন্দোনেশিয়া
সিহেরং নদীর ব্রিজ ভেঙ্গে পড়ার পর থেকে সিলাংকাপ গ্রামের শিশুরা একটি পাতলা বাঁশের ভেলা দিয়ে স্কুলে যাওয়া আসা করে। ২০১৩ সালে ব্রিজটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর থেকে এইভাবে স্কুলে যাওয়া আসার পথ করে নিয়েছে তারা। 
৪। কলম্বিয়া
স্টিলের ক্যাবল দিয়ে রি নেগ্রো নদী এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত যুক্ত। আর এই ক্যাবল পাড় করে স্কুলে যাতায়াত করে শিশুরা। রাজধানী  বোগোটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত এই গ্রামে খুব কম সংখ্যক পরিবার বাস করে। ফট্রোগ্রাফার ক্রিস্টোফ অটো এই দুই ভাইবোনের (ডেসি মোরা এবং তার ভাই জামিদের) ছবি তোলেন। ডেসি মোরা তার ৫ বছরের ছোট ভাইটিকে থলের ভিতরে ঢুকিয়ে তারপর নদী পাড় করছে। 
৫। ঝং জিয়াওয়ান গ্রাম, দক্ষিণ চীন
ঝাং জিয়াওয়ান গ্রামের শিশুরা এই সরু মই বেয়ে পাহাড় অতিক্রম করে প্রতিদিন স্কুলে যাতায়াত করে। 
৬। লেবাক, ইন্দোনেশিয়া
সিবাইলং নদীর ওপারে সাঙ্গিয়ান তানজুং গ্রামের শিশুরা ভাঙ্গা ব্রিজ পার হয়ে প্রতিদিন স্কুলে যাতায়াত করে। আরেকটি পথে স্কুলে যাওয়া আসা করতে সময় লাগে অতিরিক্ত ৩০ মিনিট। তারা ধীর গতিতে ভাঙ্গা ব্রিজটি অতিক্রম করে। 
৭। জানস্কার,  ভারতীয় হিমালয়
বরফের আস্তরের উপর দিয়ে হেঁটে প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া আসা করে হিমালয় গ্রামের শিশুরা। বরফ ভেঙ্গে পানিতে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে এই পথে। 
৮। গুলু, চীন
পাহাড়ি গ্রাম গুলু শহরের শিশুরা এই পাহাড়ি আঁকা বাঁকা রাস্তা অতিক্রম করে স্কুলে যাওয়া আসা করে। 
৯। মেঘালয়, ভারত
বিশ্বের অন্যতম বৃষ্টিপ্রবণ এলাকা মেঘালয়, যেখানে প্রতি বছর ৪৬৭ ইঞ্চি বৃষ্টি হয়ে থাকে। বিগত কয়েক বছর ধরে, মাওসিনরাম গ্রামবাসী এবং তার আশে পাশের এলাকাবাসীরা মিলে রাবার গাছের শিকড় দিয়ে ব্রিজ তৈরি করেন। যা “জীবন্ত ব্রিজ” নামে পরিচিত। কাসীর শিশুরা প্রতদিন এই রাবার ব্রিজ অতিক্রম করে স্কুলে যাওয়া আসা করে। 

যে দেশ মাত্র ৫৬ মিনিটে চক্কর দেয়া যায়

দেশের বাসিন্দারা সারা দিনে নিজেদের দেশকে একবার নয়, অনেকবারই চক্কর লাগান! এ এক অদ্ভুত দেশ। ঝকঝকে নীল আকাশের নিচে অবস্থিত এই দেশটি পায়ে হেঁটে পুরোটা ঘুরতে লাগবে মাত্র ৫৬ মিনিটফ্রান্সের একেবারে পাশের দেশ মোনাকো। ফ্রান্স ঘিরে রেখেছে দেশটির তিনদিক। আর অন্য পাশে রয়েছে ইতালি। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তের পর্যটককে আকর্ষণ করবেই এই দেশ। কিন্তু দেশটির আয়তন মাত্র ২.০২ বর্গ কিলোমিটার!  ২০১৫ সালে হওয়া আদশশুমারী অনুযায়ী, জনসংখ্যা মাত্র ৩৮,৪০০! আয়তনের দিক দিয়ে এই দেশ পৃথিবীর দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম দেশ। তালিকায় ভ্যাটিকানের পরেই এর স্থান। যদিও আয়তনের তুলনায় এ দেশের জনঘনত্ব অনেকটাই বেশি। সেই দিক থেকে এই দেশ পৃথিবীর অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ দেশ।পৃথিবীর সব থেকে ছোট নামের ভ্রমণস্থল, যাবেন নাকি একবার! মোনাকোর বাসিন্দারা সারা দিনে দেশকে একবার নয়, অনেকবারই চক্কর লাগান! দেশের বাসিন্দারা সবাই প্রায় ধনী। সেই কারণে এখানে ফর্মূলা ওয়ান কার রেসিং খুবই জনপ্রিয়। দারুণ ঝাঁ চকচকে সব ক্যাসিনো রয়েছে এখানে। এদেশের মানুষদের কোনও আয়কর দিতে হয় না।সব মিলিয়ে মোনাকো আয়তনে যতই ছোট হোক, পর্যটকদের কাছে তা দারুণ আকর্ষণীয়। এক ঘণ্টারও কম সময়ে যে দেশকে পুরোটা চক্কর কেটে ফেলা যায়, সেখানে আসতে তাই পর্যটকদের উৎসাহের কমতি নেই। 

Saturday, June 17, 2017

অক্টোপাস রাস্তা

দূর থেকে মনে হবে যেন অক্টোপাস তার আট পা মেলে দিয়েছে চারদিকে। কেউ কেউ গায়ে গায়ে লেগে থাকা সাপও বলতে পারেন, যেন এঁকেবেঁকে চলেছে। পাঁচ স্তরের রাস্তা বানিয়ে চমকে দিয়েছে বেইজিং।সবচেয়ে উঁচু রাস্তাটি মাটি থেকে ৩৭ মিটার উপরে। এক স্তর থেকে অপরটিতে পৌঁছাতে তৈরি রয়েছে ১৫টি র‌্যাম্প। আটটি মুখে রাস্তা ধরে বেরিয়ে যাবে গাড়ি। ২০০৮ সালে বেইজিং অলিম্পিকে 'বার্ডস নেস্ট' নামে অলিম্পিক ভিলেজ বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল চীন। পাখির বাসার মতো দেখতে সেই স্টেডিয়ামের স্থাপত্যে মুগ্ধ হয়েছিল বিশ্ব।  এবার আট বছরের প্রচেষ্টায় দক্ষিণ-পশ্চিমের শহর চংকিংয়ে বানানো হয়েছে আধুনিক স্থাপত্যের বিস্ময় পাঁচ স্তরে হুয়াংজুয়েন রাস্তাটি। তবে তাক লাগাতে এই রাস্তা বানানো হয়েছে, এমনটা নয়। চংকিংয়ের গ্রাম ও শহরের নির্মাণ কমিটি জানিয়েছে, বিমানবন্দর, এক্সপ্রেস রাস্তা, মূল সড়কের মধ্যে যোগাযোগ রাখতেই এমনটা বানানো হয়েছে। একেকটি রাস্তা ধরে পৌঁছে যাওয়া যাবে একেকটি গন্তব্যে। তবে রাস্তা পার হতে গেলে নেভিগেশন ব্যবস্থার সাহায্য নিতে হবে। সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ওয়েবো জানিয়েছে, কেউ যদি একটি পথ ভুল করে তাহলে আবার ফিরে এসে গন্তব্যে পৌঁছাতে একদিন লেগে যাবে। 

Thursday, June 1, 2017

বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমান

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার মরুভূমিতে শেষ হয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম বিমান ‘পল অ্যালেন’র প্রাথমিক নির্মাণকাজ। এর আগে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমান ছিল হাওয়ার্ড হুগসের ‘স্প্রুস গুজ’। বুধবার প্রথমবারের মতো চাকায় ভর করে হ্যাঙ্গার থেকে বেরিয়ে আসে পল অ্যালেন।মার্কিন গণমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিমানটির দুই পাশের পাখনার দৈর্ঘ্য ৩৮৫ ফিট করে, যা একটি ফুটবল মাঠের চেয়েও বড়। এর উচ্চতা ৫০ ফিট এবং জ্বালানিবিহীন অবস্থায় ওজন ৫ লাখ পাউন্ড। এটি আড়াই লাখ পাউন্ড জ্বালানি বহনে সক্ষম। ওজন বহনের সক্ষমতাসহ এটির মোট ওজন হতে পারে সর্বোচ্চ ১৩ লাখ পাউন্ড।
২৮টি চাকা আছে পল অ্যালেনের। আছে বোয়িং ৭৪৭-এর ছয়টি জেট বিমান। বিমানটি এতই বড় যে এর জন্য বিশেষ নির্মাণ নির্মাণ ছাড়পত্র দিতে হয়েছে মার্কিন সরকারকে। যে কোনও ব্যক্তি সামনে বিমানটি পাহাড়ের মতো মনে হবে।বিমানটি নামকরণ করা হয়েছে মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং সিয়াটল সিহকের মালিক পল অ্যালনের নামে। এর কারণ, তার অর্থায়ন ও উদ্যোগেই নির্মিত হয়েছে এই বিশালাকৃতির ‘দানব’।
তবে এই বিরাট বিমান কিন্তু কোনও যাত্রী বহন করবে না। এতে বহন করা হবে রকেট। আকারে বড় কোনও রকেট, বা একসঙ্গে অনেকগুলো রকেট বহনের জন্য ব্যবহৃত হবে এটি।বর্তমানে ‘অরবিটাল এটিকে’ নামের একটি কোম্পানির সঙ্গে মিলে মহাকাশে স্যাটেলাইট প্রেরণের পরিকল্পনা করছে অ্যালেনের ‘স্ট্রাটোলাঞ্চ’ কোম্পানি। ওই স্যাটেলাইট পাঠানোর ক্ষেত্রে একেকটি রকেটের ওজন হবে ১ হাজার পাউন্ড। ওইসব রকেট বহনের কাজেই ব্যবহৃত হবে এই বিমান।

Monday, May 29, 2017

যেসব দেশে সেনাবাহিনী নেই

বিশ্বের বহু দেশ সামরিক শক্তি প্রদর্শন করতে ভালোবাসে, নিজেদের সামরিক বহর নিয়ে হাজির হয় রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে। অপরদিকে এমন সব দেশ আছে, যাদের সামরিক বাহিনী বলে কিছু নেই। 
এমন কিছু দেশের নাম দেয়া হলো যাদের কোনো সেনাবহিনী নেই। তারপরও তারা আছে বেশ সুখে-শান্তিতে –
কস্টারিকা
মধ্য অ্যামেরিকার এই দেশটির সংবিধানই বলে যে, দেশের কোনো সামরিক বাহিনী থাকবে না। এই পরিস্থিতি চলছে ১৯৪৯ সাল যাবৎ। জাতিসংঘের শান্তি বিশ্ববিদ্যালয় এই কস্টারিকায়। 
অ্যান্ডোরা
ইউরোপের এই ছোট্ট দেশটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১২৭৮ খ্রিষ্টাব্দে। আ্যান্ডোরার নিজস্ব সামরিক বাহিনী নেই, কিন্তু প্রয়োজনে স্পেন ও ফ্রান্স দেশটিকে সুরক্ষিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অ্যান্ডোরার আয়তন মাত্র ৪৭৮ বর্গমিটার, যা কিনা জাকার্তার মতো কোনো বড় শহরের চেয়ে কম। 
লিখস্টেনস্টাইন
ইউরোপের কেন্দ্রে এই ছোট্ট দেশটি তাদের সামরিক বাহিনী বাতিল করে দিয়েছে সুদূর ১৮৬৮ সালে, আর্থিক কারণে। যুদ্ধের সময় সেনাবাহিনী গঠন করা চলে, তবে কোনোদিন তার প্রয়োজন পড়েনি। দেশটি ছোট হলেও সমৃদ্ধ: মাথাপিছু আয় বিশ্বে শুধুমাত্র কাতার-এর চেয়ে কম। 
ভ্যাটিকান
ইটালির রাজধানী রোম-এর একাংশ।  ভ্যাটিকান হলো বিশ্বের ক্ষুদ্রতম দেশ, আয়তনে শূন্য দশমিক চার বর্গ কিলোমিটার৷ জনসংখ্যা ৮৪০। কাজেই জনসংখ্যার হিসেবেও ভ্যাটিকান বিশ্বের ক্ষুদ্রতম দেশ। 
সামোয়া
প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত দ্বীপরাজ্যটি নিউজিল্যান্ড থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করে ১৯৬২ সালে। সে যাবৎ দেশটির কোনো সামরিক বাহিনী নেই। নিউজিল্যান্ড প্রয়োজনে দেশটির প্রতিরক্ষার জন্য সামরিকভাবে হস্তক্ষেপ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 
তুভালু
প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত এই দ্বীপরাজ্যটির আয়তন মাত্র ২৬ বর্গ কিলোমিটার; জনসংখ্যা মাত্র দশ হাজার। তুভালু কমনওয়েল্থের সদস্য। এখানকার শাসনব্যবস্থা এক ধরণের সংসদীয় রাজতন্ত্র। 
নাউরু
প্রশান্ত মহাসাগরের এই দ্বীপরাজ্যটির আয়তন ২১ বর্গ কিলোমিটারের কিছু বেশি; জনসংখ্যা ১০,০০০। নাউরু মাইক্রোনেশিয়ার অংশ।
গ্রেনাডা
অতলান্তিক মহাসাগরের ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে অবস্থিত দেশটি আসলে মাত্র একটিমাত্র দ্বীপ, যার আয়তন ৩৪৪ বর্গ কিলোমিটার, জনসংখ্যা এক লক্ষ ৫০০০। দেশটি কমনওয়েল্থের সদস্য। শাসনব্যবস্থা: সাংবিধানিক রাজতন্ত্র। 

চার বোনের পেশা

মেক্সিকোর টাবাসকো রাজ্যের চার বোনকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যের দৈনিক ডেইলি মেইল। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মেক্সিকোর উন্নত অঞ্চলগুলোর অন্যতম টাবাসকোতে গর্ভ ভাড়া বা ‘সারোগেসি’ বাণিজ্যের বাজার এখন প্রায় ৯০ মিলিয়ন পাউন্ডের। সেখানে হারনান্দেজ বোনদের মতো অনেকেই গর্ভ ভাড়া দিয়ে রুটিরুজি জোগান। গর্ভ ভাড়া দিয়ে নিঃসন্তান দম্পতির মুখে হাসি ফোটানোই এই চার বোনের কাজ। শুধু গর্ভ ভাড়া দিয়েই প্রতি বছর ১০ হাজার পাউন্ড (১১ লাখ ৪০ হাজার টাকা) আয় করেন মেক্সিকোর এই চার বোন।ডেইলি মেইলকে এই চার বোন জানান, গর্ভ ভাড়া দিয়ে তাঁরা নয় মাসে যা রোজগার করেন, সেই পরিমাণ অর্থ আয় করতে তাঁদের ভাইদের ২০ বছর সময় লাগবে। 
হার্নান্দেজ বোনদের সবচাইতে বড় জন মিলাগ্রোস (৩০) জানান, তাঁর হাত ধরে বাকি তিন বোনের এই ব্যবসায় আসা। এখন মার্থা (২৯), মারিয়া (২৭) এবং পাউলিনা (২২) এই ব্যবসায় বেশ আয় করছে।মিলাগ্রোস বলেন, ‘প্রতিটি নারীর কাছে তাঁর সন্তান অমূল্য ধন। কিন্তু আধুনিক যুগে সন্তান ধারণে অক্ষম নারীদের মা হওয়ার ধরন পাল্টেছে। দিন যত এগোচ্ছে, প্রযুক্তি ততই মানুষের অপূর্ণতাকে পূর্ণতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তাই জমি ভাড়া নিয়ে ফসল উৎপাদনের মতো মায়ের গর্ভ ভাড়া নিয়ে সন্তান উৎপাদন আজ আর অবাক হওয়ার কোনো বিষয় নয়।
তিনি জানান, নিঃসন্তান দম্পতিদের সন্তানের জন্য একটি ব্যবস্থা গর্ভ ভাড়া বা সারোগেশন। সারোগেশনের অর্থ হলো গর্ভধারণে সক্ষম মায়ের ভ্রুণে শুক্রাণু প্রতিস্থাপন করে সন্তান লাভ। তবে ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্রে সারোগেশনের ব্যয় খুব বেশি। আর তাই ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্রের সন্তান ধারণে অক্ষম নারীরা সারোগেশনের জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর দিকে ঝুঁকছে বেশি।
হার্নান্দেজ বোনদের মেঝো জন সার্গস মার্থা বলেন, ২৩ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের এক নিঃসন্তান দম্পতির জন্য গর্ভধারণ করেছিলেন তিনি। ৩৬ বছর বয়েসের ওই নারী ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। ক্যান্সারের কারণে তাঁর গর্ভাশয়ের একটি অংশ অপসারণ করতে হয়। এতে চিরদিনের মতো সন্তান ধারণে অক্ষম হয়ে পড়েন তিনি। কিন্তু তাঁর যে একটা সন্তান চাই।
শেষে মেক্সিকোর এক এজেন্টের (চিকিৎসক) মাধ্যমে তাঁর (মার্থা) সঙ্গে যোগাযোগ করেন ওই নারী। শেষে তাঁর মাধ্যমেই সন্তানের মুখ দেখেছিলেন ওই নারী। দেশগুলোতে গর্ভ ভাড়া দেওয়া আইনত অবৈধ। তবে এই অঞ্চলের দরিদ্র নারীদের অভাবের সুযোগ নিয়ে তাদের দিয়ে এই কাজটি করিয়ে নিচ্ছেন চিকিৎসকরা। আর পরিবারে আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য আনতে নিজেদের গর্ভ ভাড়া দেন দরিদ্র নারীরা। আর এই দরিদ্র নারীদের দিয়েই ব্যবসা করে যাচ্ছেন এক শ্রেণির ব্যবসায়ী ও বেসরকারি হাসপাতাল। কিন্তু এই যে এত টাকার বাণিজ্য হচ্ছে, তার খুব সামান্যই পাচ্ছেন গর্ভ ভাড়া দেওয়া নারীরা। 
শুধু তাই নয়, এসব নারীরা দরিদ্র ও অল্পশিক্ষিত হওয়ায় অনেক সময় তাঁদের না জানিয়েই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা।যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণায় জানা যায়, কিছুসংখ্যক চিকিৎসক নিশ্চিত সাফল্যের আশায় অনেক নারীকে না জানিয়েই গর্ভে পাঁচ থেকে ছয়টি ভ্রূণ প্রবেশ করিয়ে থাকেন। অথচ চিকিৎসাশাস্ত্র বলছে, এটি ঠিক নয়। এ ক্ষেত্রে গর্ভ ভাড়া দেওয়া নারীর জীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে।

Sunday, May 28, 2017

বিয়ের আগে মা হওয়াটা বাধ্যতামূলক যেখানে

অদ্ভুত নিয়ম চালু রয়েছে পশ্চিম বঙ্গের মাদারিহাটে। যেখানে মেয়েদের বিয়ের আগে মা… হওয়াটা বাধ্যতামূলক। অর্থাৎ আগে মেয়েদের সাথে ১ বছর গোপন মিলন করা বাধ্যতামূলক! বিয়ের সমাজে নারী পুরুষের যৌন সম্পর্কের বৈধতা দিয়ে থাকে বিবাহ। এটা সামাজিক ও ধর্মীয় রীতি। তবে এর ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা যায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ারের বীরপাড়া-মাদারিহাট।সেখানে মাতৃত্বই দেয় পছন্দের সেই পুরুষকে বিয়ের অধিকার। এটাই রেওয়াজ ‘টোটো’দের। সেখানে সবমিলিয়ে ১ হাজার ৫৮৪ টোটোর বাস। এখনো নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছেন এই উপজাতিরা।টোটো সমাজের পুরুষদের কোনো মেয়েকে বেছে নেয়ার অধিকার রয়েছে। ছেলেটির পছন্দ হলে মেয়েটিকে তার সঙ্গে ১ বছর সহবাস করতে হবে। তার মধ্যে মেয়েটি গর্ভবতী হলে তবেই বিয়ে করার উপযুক্ত হয়ে উঠবেন।তবে বিয়ে করতে হলে আগে ২ পরিবারের অনুমতি নিতে হবে।

১১২টি দেশের জাতীয় সংগীত গাইতে পারেন

মালয়েশিয়ার ৩১ বছর বয়সী থিয়ান সি শিয়েন ১১২টি দেশের জাতীয় সংগীত মুখস্থ করেছেন। কেবল মালয় ও ইংরেজি ভাষা জানলেও এতগুলো ভাষার গান দিব্যি গাইতে পারেন।পেশায় আইনজীবী শিয়েন ২০০২ সালে শখের বশে জাতীয় সংগীত শিখতে শুরু করেন। তারপর একে একে এশিয়া, ইউরোপ এবং দক্ষিণ ও উত্তর আমেরিকার প্রায় সব দেশের জাতীয় সংগীত শিখে নেন। শিয়েন দাবি করেন, তিনি প্রায় হুবহু সুরে ১১২টি জাতীয় সংগীত গাইতে পারেন। দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় সংগীতও তিনি শিখেছেন, যা কিনা পাঁচটি ভিন্ন ভাষায় গাইতে হয়। ড্যানিশ ও আরবি সুর রপ্ত করতে তাঁর বেশ বেগ পেতে হয়েছে। তবে ফরাসি, স্প্যানিশ ও জার্মান কিছুটা সহজ মনে হয়েছে।শিয়েন এখনো নতুন নতুন জাতীয় সংগীত সংগ্রহ করছেন এবং শিখছেন। কারণ, পাঁচটি মহাদেশের প্রতিটি দেশের জাতীয় সংগীত শিখে নিতে চান তিনি। এই বিশেষ দক্ষতার জন্য বিশ্বজুড়ে অনেক বন্ধু পেয়েছেন। তিনি পড়াশোনা করেছেন যুক্তরাজ্যে, সেখানে আরও অনেক দেশের ছাত্রছাত্রীকে বন্ধু হিসেবে পান। গানের কোনো আনুষ্ঠানিক শিক্ষা নেই শিয়েনের। তবে সুর শুনে শুনে আয়ত্ত করার দক্ষতা তাঁর আছে। আর তাঁর আইকিউ বা বুদ্ধিমত্তার মাত্রা ১৭৬, যা কিনা ‘অসাধারণ প্রতিভাধর’ বা তার কাছাকাছি পর্যায়ের। হয়তো এ কারণেই তিনি এতগুলো ভাষার গান ও সুর মনে রাখতে পারেন। কুয়ালালামপুরের একটি তেল ও গ্যাস কোম্পানিতে আইনি পরামর্শকের চাকরি করেন শিয়েন। বললেন, জাতীয় সংগীত শিখতে গিয়ে তিনি ইতিহাসের অনেক বিষয় জানতে পারেন। যেমন: ভারত ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের রচয়িতা একই ব্যক্তি—কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।একমাত্র অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশই বাকি আছে, যার কোনো দেশের জাতীয় সংগীত এখনো শিয়েন শেখেননি। এ নিয়ে মজা করেন এভাবে, ‘পেঙ্গুইনরা যদি আমাকে একটা গান শিখিয়ে দিত, আমি সর্বাত্মক চেষ্টা নিয়ে শিখতাম।’  

Sunday, April 23, 2017

একই দেহে দুই বোন

কারমেন আর লুপিতার একটি করে হৃদপিণ্ড, দু’টি করে হাত, একটি করে ফুসফুস থাকলেও তাদের পাঁজরের খাঁচা থেকে শরীরের বাকি অংশ কমন।মার্কিন দেশের কানেক্টিকাটের দুই কিশোরী কারমেন আর লুপিতার জীবনের কাছে চাহিদা এমন কিছু অসাধারণ নয়। তারাও আর পাঁচটা সমবয়সি কিশোরীর মতোই হোমটাস্ক করতে চায়, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে চায় আর একটা থুড়ি দুটো ড্রাইভং লাইসেন্স পেতে চায়। এমনিতে তাদের ভাবনা-চিন্তা বা কাজকর্ম মোটেই তেমন ব্যতিক্রমী নয়। ব্যতিক্রম তাদের শরীরে। কারমেন আর লুপিতা কনজয়েনড টুইনস বা সংযুক্ত যমজ।কারমেন আর লুপিতার একটি করে হৃদপিণ্ড, দু’টি করে হাত, একটি করে ফুসফুস থাকলেও তাদের পাঁজরের খাঁচা থেকে শরীরের বাকি অংশ কমন। তাদের পাচনতন্ত্র, এমনকী জননাঙ্গও কমন। চার বছর বয়সে তারা হাঁটতে শেখে। তার পর থেকে ১২ বছর তারা কদম কদম এগিয়েছে। বুঝতে শিখেছে জীবনের মানে। জন্মের পরেই ডাক্তাররা তাদের আলাদা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এতে বিপদের সম্ভাবনা ছিল বলে করা হয়ে ওঠেনি।
১৬ বছর পরে আবার চিকিযসকরা নড়েচড়ে বসেছেন কারমেন আর লুপিতার কেস নিয়ে। তাঁদের বক্তব্য এই সময়ে তাদের আলাদা না করলে বিপদ দেখা দিতে পারে দু’জনেরই। কিন্তু আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া এক সাত্রাৎকারে কারমেন আর লুপিতা দু’জনেই জানিয়েছে, তাদের এই অস্ত্রোপচারে মত নেই। কারণ, তারা এই ১৬ বছর ধরে যে জীবন যাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে, তাতে তারা পরস্পরের থেকে আলাদা হলে মানসিক ভাবেই ভেঙে পড়বে।অস্ত্রোপচারে ভয় ছাড়াও আর একটা ভয় কারমেন আর লুপিতার পরিবারকে তাড়া করছে। এই পরিবারটি মেক্সিকো থেকে আগত। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মেক্সিকান শরণার্থী-সংক্রান্ত বিরোধিতা তাদের তাড়া করে বেড়চ্ছে। যে কোনও দিন আমেরিকা ছেড়ে চলে যাওয়ার আদেশ আসতে পারে, এই ভেবে চিন্তিত কারমেন আর লুপিতা আন্দ্রাদের পরিবার। আমেরিকা ছাড়লে সেখানকার চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হবে কারমেন ও লুপিতা। সেই বিপদের দিনে কী হবে ভেবে শঙ্কিত তাদের পরিজন।

Tuesday, March 28, 2017

১৮ বছর নখ না কেটে রেকর্ড

ইতোপূর্বে আমরা নানা রকম বিশ্বরেকর্ড করার কথা শুনেছি। তবে এবার একটু ব্যতিক্রমী বিশ্বরেকর্ডের কথা শোনা গেলো আর তা হলো নারীর নখের বিশ্বরেকর্ড! আর এটি করেছেন এক নারী। তার নাম ক্রিস ওয়ালটন।যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিস ওয়ালটনের নখগুলো দেখেছেন? প্রায় ছয় মিটার লম্বা! সবচেয়ে বড় নখের মালিক হিসেবে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান করে নিয়েছেন তিনি।১৮ বছরে একবারও নখ না কেটে এই স্বীকৃতি পেয়েছেন ক্রিস। সংগীত শিল্পী ক্রিসের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল কী করলে নখ এত সুন্দর এবং বড় করা যাবে?ক্রিস হেসে বলেছেন, যথেষ্ট মিষ্টি খেলে এবং অনেক ধৈর্যশীল হলে। ১৮ বছরে একবারও নখ না কেটে নখের সাইজ এতো বড় করতে পেরেছেন তিনি। তার দীর্ঘদিনের সেই মর্যাদাও তিনি পেয়েছেন। অর্থাৎ এই স্বীকৃতি পেয়েছেন।

Sunday, March 19, 2017

কাগজের বাড়ি

আমরা সাধারণত পুরনো পত্রিকা নানান কাজে ব্যবহার করে থাকি। আর ঝাল মুড়ি বা ঠোঙায় পেপার বা পত্রিকার ব্যবহার এখনো অত্যন্ত জনপ্রিয়। কিন্তু নমনীয় ও হালকা এই খবরের কাগজ দিয়ে কী একটা বাড়ি বানানো সম্ভব?হ্যাঁ, এমনটাই করেছেন এলিস স্টেনম্যান নামের যুক্তরাষ্ট্রের এক ব্যক্তি। সংবাদপত্রের কাগজ দিয়ে বিশালাকারের বাড়ি নির্মাণ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার স্টেনম্যান ১৯২২ সালে গ্রীষ্মকালীন ছুটি কাটানোর জন্যে একটি বাড়ি নির্মাণের চিন্তা করেছিলেন। পরবর্তীতে তৈরি করেন এই কাগজের বাড়ি।

পত্রিকার কাগজের তৈরি বাড়িটি অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুয়েটসে রকপোর্ট নামক এলাকায়। এই বাড়ি নির্মাণের সবকিছুতেই খবরের কাগজ ব্যবহার করা হয়েছে। এমনকি বাড়ির মালিক এর নামও রেখেছেন ‘পেপার হাউস’।
একতলা এই লাল রঙের বাড়িতে ঢুকতেই প্রথমে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা। এরপর বামে মোড় নিলেই চোখে পড়বে খুব সাধারণ এক লগ কেবিন বা কাঠের কক্ষ। কিন্তু আসলে তা নির্মিত হয়েছে সাধারণ কাগজ দিয়ে। অন্য আর দশটা সাধারণ বাড়ির মতোই কাঠের খুঁটি, একচালা ছাদ এবং মেঝে ইত্যাদি দিয়ে বাড়ি নির্মাণ করতে গিয়ে স্টেনম্যান নামের এই ব্যক্তির মাথায় নতুন বুদ্ধি খেলে। তিনি পুরনো খবরের কাগজ এক পরতের উপর আর এক পরত কাগজ আঠা দিয়ে লাগিয়ে দেয়াল তৈরি করে ফেলেন। এবং তাতে সুন্দর করে বার্নিশ করে তার ‘পেপার হাউস’ নির্মাণ করেন।বাড়ির দেয়াল বানানোর পাশাপাশি তিনি পরবর্তীতে চেয়ারসহ অন্যান্য জিনিসপত্রও তৈরি করে ফেলেন। আর সেগুলো শুধুমাত্র কাগজ দিয়ে। এমনকি জানালার পর্দা ও দেয়ালের ঘড়িতেও সংবাদপত্রের কাগজ ব্যবহার করেন তিনি। শুধুমাত্র পিয়ানো এবং ফায়ার প্লেসের ইটগুলো ছাড়া সবই কাগজ দিয়ে তৈরি।

এমনকি বাড়িতে ব্যবহৃত আঠাও নিজে তৈরি করেন ঘরে বসে। ময়দা, পানি আর আপেলের খোসা দিয়ে সেই আঠা তৈরি করেন তিনি। কিন্তু কী কারণে স্টেনম্যান তার বাড়িতে সংবাদপত্রের কাগজ ব্যবহার করার ইচ্ছা করেছিলেন তা জানা যায়নি। তবে তার সন্তানরা ধারণা করেন, তিনি খুব সস্তা এবং সহজলভ্য উপাদান দিয়ে কিছু করতে চেয়েছিলেন।

অথবা পুরনো জিনিস হয়তো নতুন করে ব্যবহারের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন তিনি। আবার ধারণা করা হয়, সংবাদপত্রের কাগজের প্রতি ভালোবাসা থেকেই এই বাড়ি নির্মাণ করেন তিনি। এমনকি তিনি একটি মেশিনের ডিজাইন করেন যা দিয়ে পেপার ক্লিপস বানানো যায়। মূলত তিনি পরিকল্পনা করেছিলেন, বাড়ির বাইরের অংশ বিশেষ কিছু দিয়ে ঢেকে দিবেন কিন্তু যখন দেখলেন পেপার ক্লিপ দিয়ে বানানো দেয়াল ও ছাদ প্রথমবার শীতের ধকল কাটিকে টিকে গেল তখন অতিরিক্ত নিরাপত্তার খরচের চিন্তা বাদ দেন।

মাত্র দুই বছরের মধ্যেই স্টেনমেন তার কাগজের বাড়ি নির্মাণ শেষ করেন। ১৯৩০ সাল পর্যন্ত সেখানে বসবাস করেন। প্রায় ১ লাখ সংবাদপত্রের কাগজ ব্যবহার করে বাড়িটি নির্মাণ করা হয়েছিল।
বর্তমানে নব্বই বছরের অধিক সময় ধরে টিকে থাকা কাগজের বাড়িটির দেয়ালের চটা উঠতে শুরু করেছে। ১৯৪২ সালে স্টেনম্যানের মৃত্যুর পরে বাড়িটি এখন একটি জাদুঘরে রূপান্তরিত হয়েছে।

ভাসমান গ্রাম

লেক বকোডি। হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্ট শহর থেকে প্রায় ৮০ মাইল পশ্চিমে অবস্থিত বকোডি গ্রাম। সেই গ্রামেই লেক বকোডির অস্তিত্ব। এটি একটি কৃত্রিম লেক, যা ১৯৬১ সালে গড়ে তোলে দেশটির বিখ্যাত বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ‘ওরোজলানি থার্মাল পাওয়ার কোম্পানি’।বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটি সেখানে গড়ে তোলে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র, যার কাজ ছিল লেক থেকে ঠান্ডা পানি কারখানায় টেনে এনে তা গরম করে পুনরায় লেকে ফেরত পাঠানো। উদ্দেশ্য, প্রচণ্ড শীতল এই লেকের পানি যেন কখনো জমে বরফ হয়ে না যায়। এমনকি শীতকালেও নয়।

মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে লেকটি ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বিশেষ করে মাছ ধরার ক্ষেত্র হিসেবে। যারা মাছ ধরতে ভালোবাসেন তারা সেখানে গিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে মাছ শিকার করতেন।
অল্প কিছুদিনের মধ্যেই স্থানীয়রা এই লেকের পানির মধ্যে গড়ে তোলেন ছোট ছোট কিছু ভাসমান কাঠের নীড়, যা অত্যন্ত আড়ম্বরপূর্ণ। এসব ঘরে যাতায়াতের জন্য তারা দীর্ঘ কাঠের রাস্তাও তৈরি করেন। ক্রমেই এটি হয়ে ওঠে একটি ভাসমান গ্রাম।


ভাসমান বাড়িঘরের কারণে প্রত্যন্ত অঞ্চলের এই লেকটি খুব অল্প সময়ে অত্যন্ত দর্শনীয় হয়ে ওঠে। ইন্টারনেটের সুবাদে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে এর ‌সৌন্দর্য। ক্রমেই বাড়তে থাকে বিদেশি পর্যটক ও ফটোগ্রাফারদের ভিড়। স্থানীয়দের কাছে এটি হয়ে ওঠে বাড়তি আয়ের একটি উৎস।
কিন্তু ২০১৫ সালে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ করে দেয় ওরোজলানি থার্মাল পাওয়ার কোম্পানি। ফলে এই লেকের পানি আর স্বাভাবিক তাপমাত্রায় থাকে না, ঠান্ডায় জমে যায়। বর্তমানে যা মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলছে এই ‌পর্যটন শিল্পের ওপর।

Saturday, March 18, 2017

বিশ্বের ‘নোংরাতম’ মানুষ

কেটে গিয়েছে দীর্ঘ ৬০ বছর। এবং এই সময়ে একবারের জন্যও তাঁর গায়ে এক ফোঁটাও জল পড়েনি। অবাক করা ঘটনাই বটে। তবে ‘দ্য তেহরান টাইমস’-এর রিপোর্ট অনুয়ায়ী, ৮০ বছরের আমু হাজি-র এটাই সার সত্য। জল-সাবান গায়ে দেওয়াতে তাঁর ঘোরতর আপত্তি যে রয়েছে, শুধু তাই নয়। ‘স্নান’ শব্দটি শুনলেই হাজির কেমন পাগল পাগল লাগে। দক্ষিণ ইরানের ফারস জেলার একটি পরিত্যক্ত গ্রাম দেজগা। সেখানেই মাঠে-ঘাটে ঘুরে বেড়ান বৃদ্ধ হাজি। এত বছরের অপরিষ্কার শরীরে যে মাটির আস্তরণ জমেছে, তাতে মাঝেমাঝে তাঁকে প্রকৃতির উপরে পড়ে থাকা পাথর বলে মনে হয়। এমন ভাবেই হাজিকে বর্ণনা করেছেন আশপাশের গ্রামীণ মানুষজন। নিজের বলতে কেউই নেই আমু হাজির। কানাঘুষো সোনা যায়, যুবক বয়সে প্রেমে আঘাত পেয়েই নাকি এই জীবন বেছে নিয়েছিলেন তিনি। 
আমু হাজির থাকা-খাওয়া বড় অদ্ভুত। শজারুর পচা মাংস খেয়ে পেট ভরান তিনি। আর প্রকৃতির কোলই তাঁর বিছানা। গ্রামের মানুষ ইট দিয়ে একটি ঘরের মত বানিয়ে দিয়েছে তার জন্য। ইচ্ছে হলে বুড়ো হাজি সেখানেও থাকেন মাঝেমধ্যে।বেড়ে যাওয়া চুল-দাড়ি কাটার কোনও প্রশ্নই নেই আমু হাজির। যখন মনে হয় চুল-দাড়ি বেড়ে গিয়েছে, তখন আগুনে পুড়িয়ে দেন। বিশ্বের সব থেকে ‘অপরিষ্কার’ মানুষের খেতাব এখন আমু হাজির কাছেই। এর আগে সেই খেতাবে জয় করেছিলেন ৬৬ বছরের এক ভারতীয়, কৈলাস সিংহ। ৩৮ বছর গায়ে জল-সাবান দেননি সিংহমশায়। 

কিম রাজার দেশের ৭ নিয়ম

১) উত্তর কোরিয়ায় আছে মাত্র তিনটি টিভি চ্যানেল: নরম বিছানায় গা এলিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা একের পর এক চ্যানেল পাল্টানোর বিলাসিতায় যারা অভ্যস্ত, তাঁদের জন্য নরক কমিউনিস্ট রাষ্ট্রটি। সরকার অনুমুদিত মাত্র তিনটি চ্যানেল বরাদ্দ উত্তর কোরীয় জনগণের জন্য। 
২) অপরাধে হাজতবাস তিন প্রজন্মের: কোনও অপরাধ করলে তার শাস্তি পেতে হবে অপরাধীর তিন প্রজন্মকে। এই নারকীয় বিধানে হাজার হাজার নির্দোষ ব্যক্তির জীবনাবসান হয়েছে অন্ধকার জেলে। 
৩) চুল কাটতে হবে সরকারের নির্দেশ মতো: সেলুনে বসে কেতা করে চুল ছাঁটলে যেতে হবে হাজতে। স্বৈরাচারী কিমের দেশে সরকারের ঠিক করে দেওয়া আঠাশ’টি স্টাইল অনুকরণ করেই চুল ছাঁটতে হয় নাগরিকদের। ২০১৩ সাল থেকে এই নিয়ম চালু করা হয়। 
৪) অনুমতি ছাড়া থাকা যাবে না রাজধানীতে: উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ং-এ থাকতে হলে নিতে হবে বিশেষ অনুমতি। ওই দেশের সাধারণ নাগরিকদের জন্য নিষিদ্ধ রাজধানী। একমাত্র সমাজের উচ্চশ্রেণীর ব্যক্তিরাই ওখানে থাকার অনুমতি পান। 
৫) বাচ্চাদের স্কুলে পাঠালে সঙ্গে দিতে হবে ডেস্ক-বেঞ্চ: শিক্ষার মত মৌলিক অধিকারের জন্য নাগরিকদের দিতে হয় বাড়তি টাকা। শুনলে অবাক হবেন, স্কুলে ভর্তি হতে গেলে সঙ্গে নিতে হবে ডেস্ক-বেঞ্চ। শুধু তাই নয়, বেশ কিছু বইয়ের উপর ও জারি করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। 
৬) সঙ্গে বাইবেল রাখলে হবে সাজা: বাইবেল নাকি পাশ্চাত্য সভ্যতার প্রতিক। তাই উত্তর কোরিয়ায় নিষিদ্ধ এই ধর্মগ্রন্থটি। বাইবেল বিতরণের অপরাধে একবার গুলি করে মারা হয়েছিল এক খ্রিস্টান মহিলাকে।
৭) জনপ্রিয় মার্কিন বহুজাতিক সংস্থার পণ্যে নিষেধাজ্ঞা: বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় অ্যাপল, সোনি ও মাইক্রোসফটের দ্রব্য নিষিদ্ধ উত্তর কোরিয়ায়। ওই বহুজাতিক সংস্থাগুলির নির্মিত আইফোন, ল্যাপটপ ও অন্যান ইলেকট্রনিক্স দ্রব্যে ব্যবহার করলে প্রাণদণ্ডও হতে পারে ওই দেশে। 

Thursday, March 16, 2017

উল্টো রেস্টুরেন্ট

কেউ যখন নতুন কোনো পণ্য মানুষের কাছে তুলে ধরে তখন প্রথম প্রশ্ন ওঠে, মানুষ কেন ওই নতুন পণ্যের প্রতি আকৃষ্ট হবে? তা সেটা খাবার অথবা রেস্টুরেন্ট যাই হোক না কেন। কারণে গ্রাহকের কাছে নিজেদের একটু ব্যতিক্রমভাবে উপস্থাপন করতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে তীব্র অথচ চাপা প্রতিযোগিতা লেগেই থাকে। নিজেদের ভিন্নভাবে উপস্থাপন করতে সর্বক্ষণ চলে সেই প্রতিযোগিতা। কোনো কিছু যদি প্রথমত দেখে ভালো না লাগে তাহলে মানুষ তার প্রতি সহজে আকৃষ্ট হয় না। আর এখন তো মানুষ খোঁজে সব সময় ভিন্ন কিছু। তারা ভাবে তাদের পোশাক থেকে খাবার সবই ভিন্ন হবে। যারা এমন ভিন্ন আকর্ষণীয় সব কিছুর খোঁজে রয়েছেন তাদের বলছি, ঘুরে আসুন জার্মানির উল্টো রেস্টুরেন্ট থেকে।
যারা নিউজিল্যান্ডের বল্ডুইন স্ট্রিট দেখেছেন তারা মনে করেন, পৃথিবীর সব আশ্চর্য জিনিস তারা দেখে ফেলেছেন। আসলে তা নয়। সমগ্র পৃথিবীটাই আশ্চর্যরকম জিনিসে ভর্তি। কিছু আশ্চর্য আছে সৃষ্টির জন্মলগ্ন থেকেই, আবার কিছু জিনিস মানুষ নিজেই তৈরি করেছে। ঠিক তেমনি আশ্চর্য এক ক্যাফে তৈরি করা হয়েছে জার্মানিতে। ক্যাফেটিকে প্রথমে বলা হতো টপেলস হাউস টপেল পদবির একটি পরিবার এই বাড়িটির মালিক। তবে এটি বর্তমানে একটি ক্যাফে। এটির অনন্য বৈশিষ্ট হলো- এই ক্যাফের সব কিছু উল্টো। ভাবছেন মজা করছি, একাবারেই তা নয়।
বাড়ির আদলে এই ক্যাফেটি প্রথমত বাইরে থেকে দেখতে উল্টো। আপনার দেখে মনে হবে বড় কোনো ঝড়ে এটি উল্টে গেছে। যদিও এটি তৈরি করাই হয়েছে এমন করে। আপনাকে এই ক্যাফেতে ঢুকতে হবে একটি এন্টিকের কাজ করা জানালা দিয়ে। তারপর বসার ঘর, শোবার ঘর সব জিনিস উল্টো। এমনকি সিলিং ল্যাম্পগুলো মেঝের সঙ্গে লাগানো। ভেতরে ঢুকে মনে হবে আপনি ছাদে দাঁড়িয়ে আছেন আর সব কিছু আপনার মাথা নিচে।শুধু তাই নয়, এখানে যে গ্লাসে করে কফি অথবা বিয়ার খেতে দেয়া হয় সেটিও উল্টো। সত্যি খুবই চমকপ্রদ এই ক্যাফে। এবং এটি আপনার জীবনে একটি অন্য রকম অভিজ্ঞতার স্মৃতি হয়ে থাকবে।