হ্রদটির নাম লেক ন্যাট্রন। কেনিয়া আর তানজানিয়া সীমান্তের মাঝে অপরূপ সুন্দর এক জায়গা। লেক ন্যাট্রনের গভীরতা ১০ ফুট। এর পানির তাপমাত্রা ভয়াবহ রকমের বেশি। প্রায় ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ১২০ ডিগ্রি ফারেনহাইট। মাঝে মাঝে এটি ১৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট অতিক্রম করে। এছাড়া এই হ্রদের পানির pH এর মাত্রা ৯ থেকে ১০.৫, যা সমুদ্রের পানির pH থেকেও বেশি। আর ক্ষারত্ব এমোনিয়ার কাছাকাছি।
অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে হ্রদের পানি বাষ্প হয়ে উড়ে যায় আর পানিতে লবণাক্ততা বাড়ে। উত্তপ্ততার কারণে এখানে কোন বন্যপ্রাণীর বসবাস নেই। কেবল বিশেষ প্রজাতির শৈবাল আর ফ্লেমিঙ্গো পাখির আবাসস্থল এই হ্রদ। পূর্ব আফ্রিকার ২.৫ মিলিয়ন ফ্ল্যামিঙ্গো পাখির একমাত্র আবাসস্থল হচ্ছে লেক ন্যাট্রন। হ্রদটিতে লবণাক্ততা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সায়ানোব্যকাটেরিয়া নামের শৈবালও জন্মাতে থাকে। ফ্লেমিঙ্গো পাখিগুলো মূলত স্পিরুলিনা নামে নীলাভ-সবুজ শৈবাল খেয়ে বেঁচে থাকে।
অবাক ব্যাপার হলো মাঝে মাঝে ফ্লেমিঙ্গো বা অন্য প্রাণী হ্রদের পানিতে পড়ে যাবার সঙ্গে সঙ্গে মারা যায়। তারপর তাদের দেহের টিস্যুগুলো ক্যালসিয়ামে পরিণত হয়। এর ফলে তারা ক্যালসিয়ামের মূর্তিতে পরিণত হয়। একে বলে ক্যালসিফিকেশন। কিন্তু বিজ্ঞানীরা আজও জানেন না, কেন ফ্লেমিঙ্গো পাখিগুলো হ্রদের পানিতে পড়ে যায়। হ্রদের তীর জুড়ে ফ্লেমিঙ্গো, স্টার্লিং, হর্নবিল, ঘুঘুসহ অনেক পাখির মৃতদেহ এমনভাবে পড়ে থাকে, দেখে মনে হয় তাদেরকে মমি করে ফেলা হয়েছে।লেক ন্যাট্রনের তলদেশের মাটিতে রয়েছে সোডিয়াম কার্বনেট আর সোডিয়াম বাইকার্বনেট। এই হ্রদের অতিরিক্ত তাপমাত্রা আর লবণাক্ততা হ্রদটিকে পরিণত করেছে ভয়াবহ এক হ্রদে।
No comments:
Post a Comment