আজব পৃথিবী

Wednesday, May 14, 2014

সমুদ্রের নিচে বিশাল কবরখানা!

জীবিত অবস্থায় তাদের ভয়ে শঙ্কিত থাকে সমুদ্রের জীবকুল, অথচ মৃত্যুর পর সেই তিমির মাংস খুবলে খেয়েই প্রাণ ধারণ করে সমুদ্রের অধিকাংশ জীব। সমুদ্র তলদেশে গোপন এক কবরখানার গভীর থেকে পাওয়া গেছে এমনই অনেক অজানা তথ্য। 'রিমোটলি অপারেটেড ভেহিকেলস'র মাধ্যমে সম্প্রতি সমুদ্রের গভীরে ভিডিয়ো রেকর্ডিংয়ের ব্যবস্থা করেন প্লাইমাউথ মেরিন ইনস্টিটিউটের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ। সেই বিশেষজ্ঞ দলেরই প্রধান নিক হিগসের কথায়, 'তিমি মৃত্যুর অনেক খবরই পাওয়া যায়, কিন্ত্ত এ ধরনের বিশালাকার সামুদ্রিক প্রাণীর মৃত্যুর পর তাদের দেহের আদতে কী পরিণতি হয়, সে সম্পর্কে বিস্তারিত খবর কখনো পাইনি ৷এ বারের ভিডিয়ো ফুটেজে সে সংক্রান্ত অনেক অজানা তথ্যই মিলেছে।'

ফুটেজে জানা গেছে, তিমির মৃতদেহের সঙ্গে যুক্ত থাকে জটিল বাস্ত্ততন্ত্র। সমুদ্র তলদেশের এক বর্গকিলোমিটারের মতো এলাকায় ২০০৮ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত চালানো হয়েছিল নজরদারি। তাতেই ধরা পড়েছে একটি তিমি ও শঙ্করমাছ গোত্রের তিনটি প্রাণীর মৃতদেহের পরিণতির বৃত্তান্ত।হিগস জানান, এ ধরনের মৃতদেহে সমুদ্রের তলদেশে জমা হওয়ার পরই সেখানে ভিড় জমায় ইল মাছের গোত্রভুক্ত বেশ কিছু প্রাণী, কিন্ত্ত তারা তখনই খাওয়া শুরু করে না। তারা যেন মৃতদেহের পাহারাদার। তারা অপেক্ষা করতে থাকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মাংসাশী জীবের জন্য। উদ্দেশ্য একটাই৷ ছোট ছোট প্রাণীরা এসে আগে মৃতদেহকে ছোট ছোট টুকরো করে খাবে। তার পর মহাভোজ শুরু হবে ইল গোত্রের প্রাণীদের। এখানেই শেষ নয়। এর পর সেখানে ভিড় জমায় ছোট ছোট পোকারা। তাদের কাজ হাড়গুলোকে গুঁড়ো গুঁড়ো করা। ওই হাড়ের গুঁড়ো খেয়েই চলে তাদের জীবনধারণ।

হিগসের মতে, এর আগেও সমুদ্রগর্ভে বিভিন্ন গবেষণা চালানো হয়েছে, কিন্ত্ত একটি ছোট এলাকায় এত নিপুণভাবে নজরদারি এর আগে চালানো হয়নি৷ গবেষণায় জানা গেছে, বিশালাকার সামুদ্রিক প্রাণীদের দেহ থেকে অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণীদের প্রায় ৪ শতাংশ খাবারের সংস্থান হয়। সমুদ্রের উপরতলে যে সব প্রাণীরা থাকে, তাদের পক্ষে খাবারের সংস্থান করা সহজ, কিন্ত্ত গভীর জলের প্রাণীদের ক্ষেত্রে এ ধরনের মৃতদেহই ভরসা। এর উপর নির্ভর করেই প্রাণধারণ করে সামুদ্রিক মাছের একটি বড় অংশ।

No comments:

Post a Comment