আজব পৃথিবী

Monday, March 24, 2014

হিংস্র ও বিষধর মাছ

হিংস্র ও বিষধর প্রাণী হিসেবে আমরা বাঘ বা সাপের সাথে বেশী পরিচিত। আর সেজন্য এই সকল প্রাণী ভয় পায়না এমন লোক খুব কমই আছে। তবে বাঘ বা সাপ ছাড়াও অন্যান্য যে সকল হিংস্র ও বিষধর প্রাণী আছে হায়েনা, মাকড়সা ও বিছা তাদের মধ্যে অন্যতম। তবে আপনারা কখনও কি হিংস্র ও বিষধর মাছের কথা শুনেছেন?সাগরের তলদেশে বিভিন্ন জাতের জলজ প্রাণী বাস করে থাকে। আর এরই মধ্যে রয়েছে এক জাতীয় মাছ, যে মাছগুলো খুবই হিংস্র ও বিষধর। এই জাতীয় মাছের নাম ভাইপার ফিস। এরা ডলফিনেরই সমগোত্রীয়। আর সে কারণেই এসব প্রাণী লোকসমাজে খুবই পরিচিত। ভাইপার ফিস ডলফিন প্রজাতির হলেও লম্বা মুখ আর তীক্ষ্ণ ধারালো দাঁতের জন্য এই মাছগুলো অন্যসব প্রাণী থেকে একেবারেই আলাদা। এই মাছগুলোর অন্যতম আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো, এই প্রজাতির মাছগুলো সাগরের গভীর জলে বাস করে।

ভাইপার ফিস দ্রুত সাঁতার কাটতে পারে বলে এদের খাবার নিয়ে কোনও চিন্তা করতে হয় না। দ্রুত সাতার কাটার জন্য ভাইপার ফিসের শরীরের গঠন প্রণালী অন্যান্য মাছ থেকে অনেকটাই আলাদা। লেজ থেকে মাথা পর্যন্ত উপরের অংশটা খণ্ড খণ্ড ভাগে বিভক্ত। ফলে ইচ্ছা হলেই এই মাছেরা যে কোনও দিকে বাঁক নিতে পারে, এমনকি ভাঁজও করতে পারে। আর এই সব কারণে ভাইপার ফিস যখন সাঁতার কাটে তখন পানি তার জন্য বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। ভাইপার ফিসের চোখ অন্যান্য মাছের চোখ থেকে একটু আলাদা। ভাইপার ফিসের চোখের রং একেক সময় একেক রংয়ে বদলে যায়।এই মাছগুলোর শিকার ধরার পদ্ধতিও অন্যান্য মাছ থেকে আলাদা। এদের শিকার ধরার পদ্ধতি বেশ অদ্ভুত। শিকার করার জন্য এরা প্রথমে ছোট মাছগুলোকে তাড়িয়ে অন্ধকার গুহার মধ্যে ঢুকিয়ে নেয়। অন্ধকারে অন্যান্য মাছ যখন কিছুই দেখে না, তখন ভাইপার ফিস নিজের চোখের রং একের পর এক বদলাতে থাকে। এতে ছোট ছোট মাছগুলো বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে যায় এবং প্রচণ্ড ভয় পেতে থাকে। ভাইপার ফিস পরে তার বিষাক্ত ও ধারালো দাঁত দিয়ে খেয়ে ফেলে মাছগুলোকে। ভাইপার ফিসের পেট বড় হওয়ায় অন্যান্য মাছের চেয়ে এই মাছের ক্ষুধাও লাগে বেশি। তাই তারা সারাক্ষণ থাকে শিকারের ধান্দায়।

এই মাছগুলো হিংস্র ও ভয়ঙ্কর হলেও এদের উচ্চতা খুব বেশি নয়। মাত্র ১০-১২ ইঞ্চি। নারী ভাইপার ফিস বছরে একবার জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ডিম ছাড়ে। এই মাছগুলোর আয়ু ১৫-২০ বছরের মধ্যে হয়ে থাকে। এই মাছেরা ৯০০ ফুট পানির গভীরে বসবাস করে বলে শিকারের হাত থেকে এরা প্রায় মুক্ত থাকে। তাই নিরাপদে এরা বাস করে আসছে সাগরের তলদেশে।


No comments:

Post a Comment