পৃথিবীর সবচেয়ে অদ্ভুত সিনেমাটি হলটি কোথায় অবস্থিত? মিশরের মরুভূমিতে
সিনাই পেনিনসুলা নামক স্থানে পৃথিবীর অদ্ভুত সিনেমা হলটি অবস্থিত। এটাকে
একটা হল বললে আংশিক ভুল হবে। কেননা, কাঠের চেয়ার দিয়ে খোলা মাঠে তৈরি করা
হয়েছে সিনেমা দেখার অসাধারণ এক আয়োজন। এই সিনেমা হলটির সুন্দর একটি নাম
আছে। একে বলা হয় সিনেমা জগতে “পৃথিবীর শেষ প্রান্ত”। কাঠের চেয়ার দ্বারা
তৈরি অসাধারণ এ সিনেমা হলটিকে দেখলে অনেকটা প্রাচীন সভ্যতার মত কাল্পনিক
মনে হয়। এখানে ১৫০ এর মত চেয়ার আছে যেগুলোকে দেখলে মনে হয় বহুদিন ব্যবহারের
ফলে ক্ষয় হয়ে গেছে। জেনারেটর, প্রজেক্টর ও স্ক্রিন সবকিছুর অবস্থা খুবই
ভয়াবহ রকমের খারাপ। দেখলে মনে হাজার বছরের প্রাচীন কোনো সভ্যতা। কিন্তু
আশ্চর্য বিষয় হল, এ সিনেমা হলটির বয়স মাত্র ১০ বছর।
মরুভূমির মাঝখানে বসে প্রখর রৌদ্রের মধ্যে সিনেমা দেখার শখ জাগবে কার?
এক পাগলাটে ফরাসীর মাথায় তৈরি হয়েছে অদ্ভূত এই আইডিয়া। তার কাছে মনে হয়েছিল
এটা একটা অসাধারণ আইডিয়া হতে পারে। তিনি কায়রোর এক পুরাতন থিয়েটার থেকে
সিনেমার সব সরঞ্জামাদি সংগ্রহ করে মরুভূমির মাঝখানে নিয়ে আসেন এবং তৈরি
করেন অদ্ভূত এক সিনেমা হল। সম্প্রতি এ সিনেমা হলটির ছবি তোলেন ‘কপো কিকাস’
নামের এক ফটোগ্রাফার। তার ছবিগুলোই সারা পৃথিবীতে আলোচনার ঝড় তুলে।
ফটোগ্রাফার ঐ সিনেমা হল তৈরির পেছনের ইতিহাসটি খুবই সুন্দর ভাষায় ব্যাক্ত
করেছেন।
ফটোগ্রাফার লিখেছেন, এ শতকের গোড়ার দিকে এক রৌদ্রজ্জল দিনে এক পাগলাটে
ফরাসী সিনাই মরুভূমির মাঝখানে নিজেকে খুঁজে পেয়েছিলেন। সিগারেট ফুঁকতে
ফুঁকতে তিনি ভাবলেন, আচ্ছা এখানে কোন সিনেমা দেখার জায়গা নেই কেন? তিনি
ভাবলেন, এই সুন্দর খোলা মরুভূমিতে যদি একটা সিনেমা না দেখা যায় তবে জীবন
অপরিপূর্ণ থেকে যাবে। তিনি সাথে সাথে টাকা জোগাড় করার জন্য ফ্রান্সে চলে
এলেন। তারপর কায়রোতে গেলেন এবং ঐখানের এক থিয়েটার থেকে সিনেমার সব
সরঞ্জামাদি নিয়ে সিনাই মরুভূমির মাঝখানে চলে গেলেন। বিদ্যুতের জন্য তিনি
জেনারেটরের ব্যবস্থা করলেন, অতিকায় এক নৌকার পালের মত একটি স্ক্রিনের
ব্যবস্থা করলেন। এবং অবশেষে তৈরি করা হল সিনাই মরুভূমির মাঝখানে অসাধারন এক
সিনেমা হল।
No comments:
Post a Comment